ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আমনের ফলনে কাটছে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
আমনের ফলনে কাটছে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা ছবি: বাংলানিউজ

চুয়াডাঙ্গা: নবান্নের আগমনে মাস খানেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে ধান কাটার মৌসুম। মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান ঘরে তোলার কাজ।

টানা তিন মাসের কষ্ট আর পরিশ্রমের পর ভালো ফলন পেয়ে বেশ খুশি কৃষকরা। এবার বাজার দাম ভালো থাকলে লাভের হিসেব কষবেন তারা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, চলতি আমন মৌসুমে ভালো ফলন হওয়ায় সামনে দেশে দুর্ভিক্ষের যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে। আমনের মৌসুমে যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তার থেকে বেশি পরিমাণে আবাদ হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার মাঠে মাঠে বাতাসে পাকা ধানের ঘ্রাণ। মাঠের পর মাঠ সোনালী ধান খেলে যাচ্ছে দোল। আবাদী ধান ঘরে তুলতে কৃষক-কৃষাণীদের দিনভর ব্যস্ততা চোখে পড়ছে। ফলন ভালো হওয়ায় নতুন স্বপ্ন দেখছে প্রান্তিক চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আমন মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় ৩৪ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে চাষ হয়েছে ৩৫ হাজার ১৮৭ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে মাঠের প্রায় ৫০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নয়মাইল এলাকার ধান চাষি আব্দুর রউফ বলেন, এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। মাঠের ধান ঘরে তোলা শুরু হয়েছে। যে পরিমাণ ধান এবার পাব তা দিয়ে নিজের পরিবারের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে বাকিটা বিক্রি করবো। এখন দাম কেমন পাব তা নিয়ে ভাবছি।

আরেক কৃষক মোমিনুর রহমান বলেন, এবার প্রকৃতি ও আবহাওয়া আমন চাষের উপযোগী ছিল। তাই কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই ধানের আবাদ করতে পেরেছি। তবে চাষের খরচ তুলনামূলক বেড়েছে।

কথা হয় দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের ধানচাষি মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, বর্তমানে ধানের মান ভেদে ১২শ-১৩শ টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। যদি ধানের দাম কিছুটা বাড়তো তাহলে কৃষক বাঁচতে পারতো। কীটনাশক ও সারের জন্য খরচ বেশি হয়েছে। তাই উৎপাদন খরচও বেড়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র দাস বলেন, চুয়াডাঙ্গায় লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এখন মাঠে মাঠে চলছে ধান ঘরে তোলার কাজ। শতভাগ ধান কর্তন হলে তখন জানা যাবে কি পরিমাণ ফলন হয়েছে। তবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। যে ফলন স্থানীয় খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে যোগ হবে দেশের খাদ্য ভাণ্ডারে।

সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা সফরে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, এবার ভালো পরিমাণ আমন শস্য উৎপাদন হয়েছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে রিপোর্টাররা আমাদের তথ্য দিচ্ছেন, সংবাদ প্রকাশ করছেন। ইনশাআল্লাহ দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। খাদ্যের কোনো সংকট হবে না। তবে মানুষের একটু কষ্ট হতে পারে যদি ইউক্রেনের যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। রাশিয়া ও ইউক্রেন খাদ্যের বড় রপ্তানিকারক দেশ। সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বারবার সতর্ক করছেন। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির মন্দার কারণে একটা পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য জাতি হিসেবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২২
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।