ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

জামালপুরে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে 

গোলাম রাব্বানী নাদিম, ডিস্ট্রিক্ট করেপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
জামালপুরে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে 

জামালপুর: অনুকূল অবহাওয়া, কম পরিশ্রমে বেশি ফসল, কম পুঁজি, ঝুঁকিহীন, সেচ ও সার প্রয়োগের সুবিধা থাকায় ভুট্টা চাষে জামালপুরের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।  

জেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষকরা।

কম খরচে বেশি মুনাফা অর্জনের ফলে দিন দিন এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেলাটির ১১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আর চলতি বছরে ১৪ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে। এতে উৎপাদনের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।  

স্থানীয়রা জানান, সুইজারল্যান্ড-বাংলাদেশ যৌথ অর্থয়ানে এমফরসি প্রকল্পের আওতায় সরিষাবাড়ী, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ ও সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ব্যাপক আকারে ভুট্টার চাষ করা হয়। অল্প দিনে কম খরচে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় ভুট্টা চাষের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কম পুঁজি, ঝুঁকিহীন, সেচ ও সার প্রয়োগের সুবিধা থাকায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের প্রতিযোগিতা চলছে।  

সরেজমিনে সরিষাবাড়ির আওনা, কুলপাল ও ঘুইঞ্চার, ইসলামপুরের যমুনার চরের বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায়, কৃষকরা ভুট্টা ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ভুট্টার বীজ রোপণ করছেন। অনেকে রোপা আমন ধান কেটে জমি প্রস্তুত করছেন ভুট্টা চাষের জন্য। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করছেন মাঠে।

এসব স্থানে সবাই কম বেশি আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। যেসব জমিতে রোপা আমন ধান রোপণ করা হয়েছিল, সেসব জমির ধান কেটে ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে। মাটি একটু শুকালেই ভুট্টার বীজ রোপণ করা হবে।  

ভুট্টাচাষী ইসমাইল, আবুল কালাম, সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ভুট্টা চাষ চরাঞ্চলের বন্যাকবলিত মানুষদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। গত বছর যমুনার চরাঞ্চলে ব্যাপক হারে ভুট্টা চাষ করে আশানুরূপ ফল পাওয়া গেছে। এ বছর অধিক পরিমাণ আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন।

বর্তমানে বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক জমিতেই সেচও দেওয়া হচ্ছে। ভুট্টার জমিতে কখনও মাটি শুকাতে দেওয়া যাবে না। সার ও পানি ঠিক মতো দিতে পারলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়। ভুট্টা চাষে কোনো ক্ষতি নেই, পুরোটাই লাভ। তাছাড়া ভুট্টার পাতা গো-খাদ্যের সংকট দূর করে ডাটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় কৃষক ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে আবাদ করছেন।

তারা জানান, গত বছর প্রতি বিঘাতে তার ৫০ মণ হারে ভুট্টা হয়। প্রতি বিঘাতে (৩৩ শতাংশ) জমিতে খরচ হয়েছিল সাড়ে ৯ হাজার টাকা। আগাম জাতের ভুট্টা তুলে ১২শ টাকা মণ বিক্রি করেছিলেন। এবার ভুট্টার ফলন আরও বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।  

জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর জেলায় আশানুরূপ ভুট্টার চাষ করা হয়েছিল। এ বছর  আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।