ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

রাঙামাটিতে ছোট তরমুজের দাম ১০০, বড়গুলোর ২২০

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
রাঙামাটিতে ছোট তরমুজের দাম ১০০, বড়গুলোর ২২০

রাঙামাটি: শরীরের পানির চাহিদা পূরণে আর তৃষ্ণা মেটাতে তরমুজের জুড়ি নেই। আর রমজান মাস হলে তো কথাই নেই।

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে এক ফালি তরমুজ যেন অমৃত। তাই এ রমজানে তরমুজের চাহিদা অনেক। আর এ চাহিদার অনেকটাই পূরণ হচ্ছে রাঙামাটির তরমুজে।  

এবার সময়মতো কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে রাঙামাটিতে তরমুজের ব্যাপক ফলন হয়েছে।  

জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও পাঠানো হচ্ছে রাঙামাটিতে উৎপাদিত তরমুজ। এবার তরমুজের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা যেমন খুশি, তেমনি ব্যবসায়ীরাও চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা করতে পারছেন।  

পবিত্র মাহে রমজানে সাধ্যের মধ্যে কিনতে পেরে ক্রেতারাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।

ব্যবসায়ীরা এসব তরমুজ কৃষকদের থেকে কিনে নিয়ে হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। হাটে বড় তরমুজগুলো ২০০-২৫০, মাঝারিগুলো ১৫০-১৯০ টাকায় এবং ছোটগুলো ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম হাতের নাগালে থাকায় ক্রেতারা তাদের প্রিয় ফলটি কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

তরমুজ চাষিরা বলছেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি সময়মতো কমে যাওয়ায় এবং আবহাওয়া ভালো থাকায় তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। খেতেও হয়েছে অনেক মিষ্টি। যে কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রিও হচ্ছে ভালো।

তরমুজ চাষি মো. ইসমাইল বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ বছর নানিয়ারচর উপজেলায় ৬০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এবার এ পর্যন্ত ১৮ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি।

তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ফলন পেয়েছি। প্রতিটি তরমুজ ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দামে ৮০-১৩০ টাকায় বিক্রি করছি।

তরমুজ ব্যবসায়ী দীপংকর চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমি মাইনী লংগদু এলাকা থেকে চাষিদের কাছ থেকে শত প্রতি পাঁচ হাজার, সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় কিনে আনি। এরপর বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি শত তরমুজ সাত হাজার, সাড়ে সাত হাজার টাকায় বিক্রি করি।

বনরূপা এলাকার ব্যবসায়ী মোজাম্মেল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। দামও হাতের নাগালে রয়েছে।

এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, তরমুজের সাইজ অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ছোটগুলো পিস প্রতি ৮০-১০০ টাকা এবং বড়গুলো ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবার ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এ বছর তরমুজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫০ হেক্টর জমি থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ পাওয়া গেছে। তবে চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ২০০ মেট্রিক টন তরমুজ পাওয়া যাবে বলে আশা করছে করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি জেলার উপ-পরিচালক আপ্রু মারমা বাংলানিউজকে বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় তরমুজের ব্যাপক চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে, ফলটিও বেশ সুস্বাদু হয়েছে।

এ কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, অন্যান্য বার বাজারে তরমুজের বেশি দাম থাকলেও এবার সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।
এ বছর তরমুজের বেশি আবাদ হয়েছে লংগদু উপজেলায়। এছাড়াও জেলা সদর, বরকল, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর ও বিলাইছড়ি উপজেলায়ও তরমুজের আবাদ হয়েছে। ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা বেজায় খুশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘন্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।