ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কুমিল্লায় নতুন জাতের ধান, খরচ কম ফলন বেশি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৩
কুমিল্লায় নতুন জাতের ধান, খরচ কম ফলন বেশি

কুমিল্লা: কুমিল্লার মাঠে এবারের বোরো মৌসুমে চাষ করা হয়েছে নতুন জাতের ধান, যার নাম বিনা-২৫। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামের মাঠে দেখা মেলে এ জাতের ধানের।

ধানটি চিকন ও লম্বা। কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্যান্য ধানের চেয়ে এর দাম বেশি। সাধারণ চালের কেজি যদি ৬০ টাকা হয়, এ ধান থেকে পাওয়া চালের কেজি ন্যূনতম ১০০ টাকা হবে। এ চালের ভাত খেতে বেশ মজা।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল)  কুন্দারঘোড়ায় কৃষক সমাবেশে বক্তারা জানান, বাজারে মিনিকেট বলে এক ধরনের চাল বিক্রি হয়। বাস্তবে এমন চালের অস্তিত্ব নেই। মেশিনে বারবার ছাঁটাই করে এ চাল বাজারে আনা হয়। যার কারণে পুষ্টিগুণ হারায় এ চাল। নতুন চাষ হওয়া বিনা-২৫ ধান মিনিকেট চালের মতো চিকন। এর ফলন বোরো মৌসুমে আবাদকৃত অন্যান্য ধানের চেয়ে বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে অন্যান্য ধান যদি সর্বোচ্চ ছয় টন হয়, বিনা-২৫ এর ন্যূনতম উৎপাদন হয় সাত টন। অন্যান্য ধানের চেয়ে এর জীবনকাল কম। যার ফলে জমিতে সার, সেচ ও খরচ তিনটিই কম লাগে।

তারা জানান, বাংলাদেশে চিকন চালের চাহিদা মেটাবে বিনা-২৫ ধান। এছাড়া এটি বিদেশেও রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। কুমিল্লার মাঠ থেকেই এ স্বপ্ন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।

সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামের কৃষক আবু বকর শিবলী বলেন, বিনা-২৫ ধানে রোগবালাই কম। এর ফলন দেখে আমরা অভিভূত। তবে এবার বীজের যে চাহিদা, তাতে মনে হয় চাল খেতে পারব না!

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন, যতটুকু বীজ পেয়েছি তা দিয়েই আমরা এ এলাকায় বিনা-২৫ ধান চাষ শুরু করেছি। আগামীতে আরও বেশি এলাকাজুড়ে এর আবাদ করতে চাই।

বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আশিকুর রহমান বলেন, কুমিল্লার মানুষ সৌখিন। তারা চিকন চাল খেতে পছন্দ করেন। বিনা-২৫ কুমিল্লার মানুষের সেই সাধ পূরণ করবে। শুধু কুমিল্লা নয়, কুমিল্লা থেকে এর ব্যাপ্তি পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ মৌসুমে কুমিল্লার ১৭ উপজেলার ১৮ হেক্টর জমিতে প্রথম এই জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এর ফলন বেশি। এ ধান গাছ শক্ত, তাই দুর্যোগ সহনশীল। আবার লম্বা হওয়ায় খড় পাওয়া যায় বেশি।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড.মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান গবেষক ড. সাকিনা খানম। সভাপতিত্ব করেন বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আশিকুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।