ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ঘূর্ণিঝড় মোখা: শঙ্কায় আগাম ধান কাটছেন কৃষকরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় মোখা: শঙ্কায় আগাম ধান কাটছেন কৃষকরা

মাদারীপুর: ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ক্ষতির শঙ্কায় জমির আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন মাদারীপুরের কৃষকরা। ফলে জেলার সর্বত্রই ইরি ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকরা।

ধান কাটতে শ্রমিকের পাশাপাশি প্রতিবেশী-আত্মীয়-স্বজনরাও সহযোগিতা করছেন। ঝড়ের আগে ঘরে ধান তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন চাষীরা।

তারা জানান, বিগত বছরে ঝড়ে ক্ষেতের ধান অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এ বছর তাই আগেভাগেই ধান কেটে ঘরে আনছেন তারা। এছাড়াও জেলার নদ-নদীর অববাহিকা, নিচু অঞ্চলের ধান ইতোমধ্যে কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। এবার ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে যাতে কোনো ক্ষতির মুখে পড়তে না হয় সে কারণে গত বুধবার (১০ মে) থেকেই ধান কাটা শুরু করেছেন জেলার কৃষকেরা।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার শঙ্কায় জমিতে ধান কাটতে ব্যস্ত কৃষকরা। ধান কেটে ঘরে তুলতে সহযোগিতাও করছেন অন্যরা। রোপা আমনের ফলন ভালো হওয়ায় আনন্দিত কৃষকরা। জেলার সদর উপজেলা, কালকিনি, শিবচরের বিস্তৃর্ণ জমির ধান ঝড়ের প্রভাব পড়ার আগেই কেটে ঘরে তুলতে চান তারা।

এদিকে ধান কাটায় শ্রমিকের পাশাপাশি কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশী, স্বজনসহ অনেকেই। স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নিয়েছেন ধান কাটায়।

কৃষকরা জানান, এবার জমিতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে আমার ৫/৭ দিন গেলে সব ধান পরিপূর্ণ হতো। কিন্তু ঝড় শুরু হতে পারে দুই/একদিনের মধ্যে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন তারা। এ কারণেই সতর্কতার সঙ্গে জমির ধান কেটে ঘরে আনা হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম বলেন, গতবার ঝড়ে আমার ধান নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতেই পচে গেছে। এবার তাই আগেই কেটে ফেলছি। কষ্ট এবং খরচ করে ধান উৎপাদন করলেও লাভের পরিমাণ কম। তার ওপর যদি ঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

এদিকে জেলা কৃষি অফিস ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পাকা ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে জেলার ৫৫ শতাংশ জমির ধান কাট হয়েছে বলেও কৃষি অফিস জানায়।

মাদারীপুর জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৩৩ হাজার ৫৬৬ হেক্টর জমিতে রোপা বোরো আবাদ হয়েছে। যা গতবারের চেয়েও ৫৫০ হেক্টর বেশি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ২২০ মেক্ট্রিক টন ধান। যেখান থেকে চাল উৎপাদনের পরিমাণ হবে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৫ মেক্ট্রিক টন।

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, জেলায় ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ধান পেকেছে। মাঠে এখনো ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাঁচা ধান রয়ে গেছে। ফলে কৃষকদের আগেভাগে ধান টাকার পরামর্শ দিচ্ছি। আশা রাখি আগামী ১৫ থেকে ১৬ মের মধ্যে পুরো ধান পেকে যাবে, তবে ভয়ের কারণে আগেই ধান কাটতে কৃষকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। মাদারীপুর জেলায় প্রধান খাদ্য উৎপাদনকারী শস্য হচ্ছে ধান।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, মে ১২,২০২৩
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।