বরিশাল: চলতি মৌসুমে ধানে ভালো ফলন হওয়ায় খুশি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা কিছুটা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কৃষকদের মাঝে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায়, জমিতে থাকা বাকি ধান কেটে দ্রুত ঘরে তোলার আহ্বান জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, যদি প্রবল শক্তি নিয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’, তাহলে উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হবে। সেই সঙ্গে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো বাতাসের কারণে পাকা ধান গাছের ক্ষতি হতে পারে। তাই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই উপকূলীয় এলাকায় ধান পেকে যাওয়ায়, তা কেটে তোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বরিশাল বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে,চলতি বছর বিভাগের ৬ জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৯৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার ২৩৩ হেক্টর জমিতে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সম্পর্কে আগেভাগেই সতর্ক ছিল বরিশাল কৃষি বিভাগ। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের যাতে ক্ষতি না হয় সেলক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তারা কৃষকদের সচেতন করার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। যার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভাগে ৬ জেলায় প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে।
আর ধান কাটতে গত দুই দিন ধরে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলার কৃষকরা। এরমাঝে যারা শ্রমিক পাচ্ছেন না সেইসব কৃষক পরিবারের পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এগিয়ে এসেছেন ধান কাটায় সাহায্য করতে।
বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের উলাল বাটনার ধানের জমির মালিকরা জানান, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মোখা তাদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে৷ অতিরিক্ত টাকা দিয়েও শ্রমিক পাচ্ছেন না ধান কাটার।
এদিকে বরিশাল সদর উপজেলার কৃষক শুক্কুর মিয়া জানিয়েছেন, সারের মূল্য বৃদ্ধিতে উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও আবহাওয়ার কারণে বোরো ধানের ফলন এবার ভালো হয়েছে। ধান পেকে যাওয়ায় কেটেও ফেলেছেন অনেকে। এখন ন্যায্য দাম পাওয়ার অপেক্ষা। তবে ভালো দাম না পেলে ব্যয় ওঠা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশালের উপ-পরিচালক মুরাদুল হাসান জানান, বরিশাল জেলায় ৬১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোর ধানের আবাদ হয়েছে। যারমধ্যে ৮০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শওকত ওসমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে উদ্ভুত সমস্যা মোকাবিলা এবং ফসল রক্ষার জন্য আগেভাগেই মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
এমএস/এসআইএস