মাদারীপুর: মাদারীপুর হর্টিকালচারে একটি আম গাছে একসঙ্গে আট প্রজাতির আম ধরেছে। এই প্রথম এক গাছেই আট প্রজাতির আম ধরায় বিস্মিত সাধারণ মানুষ।
এখান থেকে আরও গাছ তৈরির মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে হর্টিকালচার কর্তৃপক্ষের।
হর্টিকালচার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে একটি আম গাছের দশটি শাখার সঙ্গে ১০ প্রজাতির আম গাছের ডাল বসানো হয়। এর মধ্যে ৮ প্রজাতির গাছ বেঁচে যায়। এবং গাছটি দ্রুত বড় হতে থাকে। এর আগেও গাছটিতে আম ধরেছিল। তবে ২/৩টি প্রজাতির আম হয়েছিল। তবে এ বছরই সব প্রজাতির আমের মুকুল আসে এবং আম বড় হতে থাকে।
বর্তমানে গাছটিতে মিয়াজাকি, পালমার্ক, থাই জাম্বু, কাটিমন, বারি আম-১১, কিউজাই, হিমসাগর ও ব্যানানা জাতের মোট আট প্রজাতির আম ধরেছে। এর মধ্যে ১২ মাসি আমের ২টি প্রজাতি রয়েছে। প্রত্যেক জাতের সর্বোচ্চ ১০টি এবং সর্বনিম্ন ৫/৬টি করে আমের ফলন এসেছে।
বর্তমানে হর্টিকালচার সেন্টারে এ ধরনের নতুন গাছ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে আরও ৩টি গাছে ৫টি করে প্রজাতির কলম করা হয়েছে। একসময় সারাদেশে এ ধরনের আম গাছের বিস্তার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এখানকার উদ্যানতত্ত্ববিদরা।
জানা গেছে, নানা আকার ও বর্ণের আম ঝুলে আছে গাছটিতে। গাছটির উচ্চতা প্রায় ১০ ফুটের মতো। লাল, সবুজ ও খয়েরি রঙের এসব বাহারি আমগুলো দেখতে গোল, চ্যাপ্টা ও কলার মতো লম্বাকৃতির। গাছটির কয়েকটি ডালে আম পরিপক্ব হয়ে উঠেছে আবার কিছু ডালে মাত্র আমের মুকুলও এসেছে। এক গাছে ৮ প্রজাতির বাহারি আম দেখে কৌতুহলী হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, 'হর্টিকালচারে এক গাছে নানা রকমের আম ধরার খবর পেয়ে অনেকেই দেখতে আসছেন গাছটি। এ ধরনের গাছ বাড়িতে লাগাতে আগ্রহ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এ ধরনের গাছ ছড়িয়ে দিতে পারলে সারা বছরই আমের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। তাছাড়া এক গাছ থেকেই আট রকম আম পাওয়ায় এ ধরনের গাছের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। নানা এলাকা থেকে গাছটি দেখতে আসছেন অনেকেই।
মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি অভিনব কলম পদ্ধতি। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বীজের চারা থেকে কলম করার মাধ্যমে এ ধরনের গাছ তৈরি করা হয়েছে। একই গাছে বিভিন্ন প্রজাতির আমের সংমিশ্রণ তৈরি করায় বছরের লম্বা সময় ধরে এই গাছটি থেকে আম পাওয়া যাবে। '
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের গাছের উদ্ভাবনে সময় লাগে কমপক্ষে ২ থেকে ৪ বছর। সব মিলিয়ে গাছে ফল আসতে ৪ বছর সময় লেগে যেতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে এ গাছ বাজারজাত করতে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রথমত বীজ থেকে চারা তৈরি করতে হবে। এরপর গাছের শাখার ওপর নির্ভর করবে কয়টি জাতের কলম দেওয়া যাবে। এতে সময় লেগে যায় ২/৩ বছর। আমরা এ ধরনের গাছ উদ্ভাবনের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে আর ৩টি গাছে আমরা কলম করেছি। সেখানে ৪/৫টি প্রজাতি রয়েছে। '
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
আরএ