পঞ্চগড়: আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারও পাট চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। গত বছরে ভালো দাম পাওয়ায় এবার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কৃষাণ-কৃষাণীরা কয়েকগুণ বেশি আবাদ করেছে পাট।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) পঞ্চগড় সদরের সাতমেরা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, পাট কাটার পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।
সরেজমিনে গেলে চাষিরা অভিযোগ করে বলছেন, পঞ্চগড়ে গত বছরে মণ প্রতি ২৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা করে পাট বিক্রি করেছেন। এবার পাট বিক্রির শুরুতেই গতবারের চেয়ে মণ প্রতি দাম কমেছে এক হাজার টাকা।
সাতমেরা ইউনিয়নের বেংগুটারা গ্রামের মুক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, গতবছর দুই বিঘা জমিতে পাট আবাদ করে কিছুটা লাভ করতে পেরে এবার চাষ আবাদ বাড়িয়েছি। কিন্তু এখন দেখছি আগের মূল্য থেকে এক হাজার টাকা কমে গেছে দাম।
সুরুজ আলী নামে কৃষক বলেন, পাট চাষ করতে এক বিঘাতে ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়। কঠিন পরিশ্রম করে পাট আবাদ করি। কিন্তু বর্তমান বাজারে পাটের দাম অনেক কম। ফলে লোকসানে পড়তে হচ্ছে।
জলিল মিঞা নামে আরেক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, বাজারের এমন অবস্থা চললে পাট আবাদ বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ বর্তমানে আবাদ করতে যে খরচ হয়েছে, সেই মূল্য শুরুতে পাচ্ছি না।
এদিকে পাইকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা পাটের সঠিক দাম না দেওয়ার পাশাপাশি গত বছরের বকেয়া বিল থাকায় কৃষকদের কাছ থেকে কম মূল্যে পাট ক্রয় করতে হচ্ছে।
পাইকার ব্যবসায়ীরা মনির ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গতবছরে মিল মালিককে পাট দিয়ে এখনো টাকা তুলতে পারিনি। তাই আমাদের কাছে টাকা না থাকায় কম দামে পাট কিনতে হচ্ছে।
কৃষি অফিস বলছে, চলতি মৌসুমে জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে। আর পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৩৪৪ বেল্ট।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এ জেলায় পাট উৎপাদন ভালো হওয়ায় চাষিদের নিয়মিত বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
এসএম