ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ফেনীতে বাড়ছে সবজির চাষাবাদ, যুক্ত হচ্ছেন প্রবাস ফেরতসহ অনেকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
ফেনীতে বাড়ছে সবজির চাষাবাদ, যুক্ত হচ্ছেন প্রবাস ফেরতসহ অনেকে

ফেনী: কৃষিতে প্রযুক্তির প্রসার ও ভালো মানের বীজ সরবরাহ থাকায় প্রবাসী অধ্যুষিত অগ্রসরমান জনপদ ফেনীতে বাড়ছে সবজির আবাদ। চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন প্রবাস ফেরত, ব্যবসায়ী, শিক্ষিত যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে ভালো আয় করছেন অনেকে।

জেলার ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা ফুলগাজীর পূর্ব দরবার পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বিদেশ ফেরত আবু তাহের বাহার। দীর্ঘ ৩০ বছর প্রবাসে কাটিয়ে বাড়িতে এসে অবসরের সময়টুকু কাটাচ্ছেন ফসলের মাঠে। নিজের ১০ একর জমির মধ্যে পাঁচ একরে চাষাবাদ করেছেন ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, গোল আলু, কাঁচামরিচ, বেগুনসহ নানা পদের বাহারি সবজি। নিজের সঙ্গে নিয়েছেন এলাকার আরও কয়েকজনকে। কৃষি কাজ করে প্রতিমাসে আয় করছেন অর্ধ লক্ষাধিক টাকা।

একই উপজেলার আবুল খায়ের ভূঞা মিন্টু। ছিলেন ঠিকাদার, এখন পুরোদস্তুর কৃষক। চলতি শীত মৌসুমে ১২ শতক জমিতে চাষাবাদ করেছেন উন্নত মানের টমেটো। তেল উৎপাদনের জন্য ছয় শতকে লাগিয়েছেন সরিষা। গত কয়েক বছর আরবের ফল শাম্মামসহ হলুদ তরমুজ চাষেও কৃতিত্ব দেখিয়েছেন এই কৃষক।

সবজির আবাদের এসব প্রকল্পে কৃষকদের সঙ্গে কর্মসংস্থান হচ্ছে সাধারণ দিন মজুরদেরও। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকরা কাজ করছেন ফসলের মাঠে। আয় করছেন দৈনিক ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা।  

জেলার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে শীতকালীন সবজি চাষ আগের চেয়ে বেড়েছে। ধানের আবাদের পর এখন আর কোনো জমিই পতিত পড়ে থাকছে না।

কৃষকদের সবজির আবাদে ভালো ফলনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগ থেকে সার-বীজসহ পরামর্শ সেবাসহ বিভিন্ন সহায়তা দিচ্ছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। ফুলগাজীর ধলিয়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোজ কান্তি দেব জানান, সব ধরনের সহায়তা নিয়ে কৃষকদের পাশে থাকেন তারা।

কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার ও ভালো বীজ সরবরাহ হওয়ায় সবজি আবাদ বাড়ছে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত শীত মৌসুমে সবজি উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ২৫০ হেক্টর। চাষ হয়েছিল পাঁচ হাজার ৩৫১ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৩৮ হাজার ৩০ মেট্রিক টন। কৃষিকাজে সম্পৃক্ত ছিল সাড়ে ২৩ হাজারের মত কৃষক।

চলতি মৌসুমে সবজি উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৩৬ হেক্টর। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আবাদ হয়েছে পাঁচ হাজার ২৪২ হেক্টর জমিতে। আরও ২০০ হেক্টরে আবাদের পরিকল্পনা আছে কৃষকদের। চলতি মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন সবজি। এ চাষাবাদে সম্পৃক্ত থাকার কথা রয়েছে ২৫ থেকে ২৮ হাজার কৃষকের।

ফুলগাজী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খোরশেদ আলম বলেন, প্রযুক্তির প্রসারে কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণে। কৃষিতে প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ঋণসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়লে এ জেলায় সবজির আবাদ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ও কৃষক ও সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
এসএইচডি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।