ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

নানা গুণের মিষ্টি আলু

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৬
নানা গুণের মিষ্টি আলু

ঢাকা: নাম তার মিষ্টি আলু। নানা গুণে গুণান্বিত এই আলুর নামের সঙ্গে কাজের মিলও রয়েছে শতভাগ।

নানা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মিষ্টি আলুর পাতা থেকে শুরু করে সব কিছু খাওয়া যায়।

 

সকালে শুধু মিষ্টি আলু খেয়ে দিনভর মাঠে কাজ করে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরার উদাহরণও কৃষক পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া রুপচর্চাতেও এ আলুর ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে।
 
মিষ্টি আলুর মিষ্টতা বলে শেষ করার মতো না! তবে হতাশার কথা হলো বিভিন্ন গুণসমৃদ্ধ এ আলুর উৎপাদন ও চাষ দিনদিন কমে যাচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা এখনো সেই প্রাচীন পদ্ধতিতেই চাষ করছেন মিষ্টি আলু।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কন্দার ফসল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ও আলু গবেষক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্য সবচেয়ে বেশি উপাদান রয়েছে এ আলুতে। বিশেষ করে ডায়েবেটিস রোগীদের জন্য এই আলু খুবই উপকারী।

প্রায় দুই যুগ ধরে আলু নিয়ে কাজ করা এই গবেষক জানান, বহুগুণে গুণান্বিত এই আলুর চাষ ও উৎপাদন দিনদিন শুধু কমেই যাচ্ছে। কৃষকের দোঁড়গোড়ায় যাচ্ছে না উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন জাত। এছাড়া যেসব জমিতে এই আলু চাষ হয় সেসব জমিতে অন্য ফসল চাষ হচ্ছে।
 
সারা বছর চাষ হওয়া এই ফসলটির উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, মিষ্টি আলু উৎপাদনে সময় দরকার হয় প্রায় পাঁচ মাসের মতো। অথচ একই সময়ে বর্তমানে কৃষকরা দুটি ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। আর দামও তেমনভাবে পান না তারা।

বারি সূত্র জানায়, গত ৩০ বছরে আলু চাষে ৫০ ভাগ জমি ও উৎপাদন কমে গেছে। ১৯৮৫-৮৬ সালে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হতো। বর্তমানে আছে ৩০ হাজার হেক্টরে চাষ হচ্ছে। আর সেই সময়ে উৎপাদন হয়েছে ছয় লাখ মেট্রিক টন, যা বর্তমানে তিন লাখ মেট্রিক টনের নিচে কমে গেছে। বর্তমানে বেশি আলু চাষ হচ্ছে বারি মিষ্টি আলু চার ও আট।

মিষ্টি আলুর গুণাগুণ

এ আলুতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও চিনি থাকে। যা শরীরে শক্তি জোগান দেওয়ার পাশাপাশি কাজে-কর্মেও গতি আনে। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-৬ সহ প্রয়োজনীয় নানা পুষ্টি উপাদান।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, মিষ্টি আলুতে যেসব ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট আছে সেগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর ভারী ধাতু থেকে স্বাস্থ্য-ঝুঁকি কমাতে বেশ সহায়ক। মিষ্টি আলুতে থাকা শর্করা শরীরের জ্বালানির প্রধান উৎস।
 
কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমকে চাঙা রাখে এ আলু। যা মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজন। মাংসপেশি সবল রাখতে খাওয়া যেতে পারে মিষ্টি আলু। তীব্র শীতে মাংসপেশী জমে যাওয়া এড়াতেও মিষ্টি আলু অগ্রণী ভূমিকা রাখে।
 
কিডনি ও হৃদস্বাস্থ্যের জন্যও ভালো মিষ্টি আলু। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা শরীরের কোষে তরল ইলেকট্রোলাইটেসর ভারসাম্য বজায় রাখে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে মিষ্টি আলু। কোলন ক্যানসার প্রতিরোধেও বিশেষ উপকারী এ আলু।
 
এছাড়া ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় মিষ্টি আলুর তুলনা নাই। এ ছাড়া মিষ্টি আলুতে প্রাকৃতিকভাবে চিনি থাকলেও তা ধীরে ধীরে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়, ফলে শরীরে প্রয়োজন মাফিক শক্তির জোগান অব্যাহত থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৬
একে/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।