ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বাঁধা সময়ই কাল হতে যাচ্ছে আম ব্যবসায়ীদের

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৬
বাঁধা সময়ই কাল হতে যাচ্ছে আম ব্যবসায়ীদের ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার ২৫ মে’র আগে গাছ থেকে আম ভাঙতে পারেননি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিরা। আমে ফরমালিন ঠেকাতে মৌসুম শুরুর আগেই ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।

কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের নিষেধাজ্ঞা শেষে এখন সব গাছের আম এক সঙ্গে পাকতে শুরু করেছে। বাধ্য হয়েই গাছ থেকে পাকা আম নামিয়ে ফেলতে হচ্ছে চাষিদের। ফলে চলতি সপ্তাহে বাজারে আমের যোগান বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় এখনও ঢাকা বা অন্য স্থান থেকে পাইকাররা আসছেন না।

তাই আমের মোকামে এখন পর্যাপ্ত ক্রেতা নেই। এর উপর চলতি সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। এতে ভরা মৌসুমের বেচা-কেনায় ধস নামার আশঙ্কা করছেন এই অঞ্চলের আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। বাজার মন্দা হলে এ মৌসুমে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে দাবি তাদের।

এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ১ জুন বুধবার থেকে ক্ষীরশাপাত বা হিমসাগর ও লক্ষ্মণভোগ আম ভাঙ্গা হচ্ছে গাছ থেকে। ১০ জুন নামানোর কথা রয়েছে ল্যাংড়া ও বোম্বাই, ২৫ জুন ফজলি, ১ জুলাই আম্রপালি এবং ১৫ জুলাই থেকে আশ্বিনা আম নামানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে। বাজার তদারকির মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বর্তমানে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মণিগ্রাম এলাকার সফল আম চাষি ও ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান জানান, বেঁধে দেওয়া সময় নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল তাদের। কারণ আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে এই অঞ্চলে সময়ের আগেই গাছে আম পেকে যায়। এ অবস্থায় কয়েক দিনের ব্যবধানে এক সাথে আম ভাঙ্গার নির্দেশনা দিলে পাকা আম নিয়ে চাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়বেন এ কথা বহুবার বলা হয়েছে। কিন্তু কেউ তাদের কথা শোনেননি। ফলে যা হওয়ার তাই হতে যাচ্ছে এবার।

বছরজুড়ে পরিশ্রম ও বিনিয়োগের ফল সুষ্ঠুভাবে ঘরে তুলতে পারলেই মুখ ফুটতো কৃষকের। কিন্তু মোকামে পাইকাররা এখন পর্যন্ত সেভাবে না আসায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া সঠিক দাম ও বাজারজাত করা নিয়েও দুশ্চিন্তা ভর করেছে ব্যবসায়ীদের মনে, জানান জিল্লুর।

তার অভিযোগ, এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী ফসল আম নিয়ে দু’বছর থেকে বহুমুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ফরমালিনের ধুয়া ‍তুলে আম নিয়ে বিরূপ প্রচারণাও হয়েছে। ফলে বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। তাই কৃষকদের বাঁচাতে এখন সরকারের উচিত ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া।

তবে রাজশাহী জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীন জানান, রাসায়নিকমুক্ত আমের বাজারজাত নিশ্চিতে তারা খুবই সচেতন। গাছ থেকে অপরিপক্ক আম নামিয়ে রাসায়নিক দিয়ে পাকিয়ে বাজারে ওঠা ঠেকাতেই এবার জেলার প্রতিটি উপজেলায় সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং এসি (ল্যান্ড) এর সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়। এখন তারা সেই বিষয়গুলো দেখছেন।

পুরো মৌসুম জুড়ে তাদের মনিটরিং থাকবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৬

এসএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।