ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

কৃষি

গম কেনায় আবারও কেলেঙ্কারির আশঙ্কা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
গম কেনায় আবারও কেলেঙ্কারির আশঙ্কা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গত বছর ব্রাজিল থেকে কেনা পঁচা গম নিয়ে কম অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে। এ নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠার পর নিজে সংসদে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।

নতুন করে সরকার রাশিয়া থেকে গম কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। এবার এই গম কেনা নিয়েও আবার কেলেঙ্কারির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
 
সম্প্রতি সরকার টু সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতে রাশিয়া থেকে গম কেনার উদ্যোগ নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। সেই উদ্যোগে আগামী দুই মাসের মধ্যে রাশিয়া থেকে ২-৫ লাখ মেট্রিক টন গম আনার কথা চলছে।

আর এই গম কেনায় নিয়োজিত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে সংসদীয় কমিটিতে চিঠি দিয়েছেন হারিস আহমেদ নামে জনৈক ব্যক্তি।  

কমিটির সভাপতি বরাবর দেওয়া চিঠিতে হারিস আহমেদ অভিযোগ করেন, যোগ্যতা নেই এমন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে জি টু জি পদ্ধতিতে গম কেনার উদ্যোগ নেওয়ায় মহাকেলেঙ্কারি ঘটতে পারে। তিনি এই প্রক্রিয়া বন্ধে উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন।  

তার দেওয়া চিঠির একটি কপি বাংলানিউজের কাছে রয়েছে।
 
চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রায় ২ থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন গম আনা হবে রাশিয়া থেকে। পুরো বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদে চলতি দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা বদরুল হাসান।  
 
চিঠিতে তার বিষয়ে অভিযোগ করা হয়, বদরুল হাসান গ্রেড-৩ পর্যায়ের কর্মকর্তা। দু’বার বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাকে ডিজির চলতি দায়িত্ব দিয়েছে। ডিজি পদটি গ্রেড-১ পর্যায়ের।  

চিঠিতে বলা হয়েছে, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এখন তাকে স্থায়ীভাবে ডিজি পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি রাষ্ট্রপতির নির্দেশ ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু তার ক্ষেত্রে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। উল্টো মাত্র ৩ মাস আগেই এ গ্রেড-৩ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে গ্রেড-১ পর্যায়ের পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।  
 
চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, এমন একজন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রাশিয়া থেকে গম কেনা হলে অনিয়ম ও দুর্নীতি হতে পারে। কারণ বিশেষ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই তাকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।  

চিঠিতে আরও বলা হয়, গম কেনার সঙ্গে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি জড়িত। অথচ এরকম ‘কম যোগ্য’ কর্মকর্তাকে দিয়ে এসব কাজ করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।  
 
এ গম কেনায় বাংলাদেশের স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে আছে খান বাহাদুর গ্রুপ। যার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাঈন চৌধুরী।
 
এ প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে, বিষয়টি নিঃসন্দেহে গুরুতর। কমিটির পরবর্তী বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করা হবে। একইসঙ্গে বিষয়টির ওপর আইনসিদ্ধ পরামর্শ দেওয়া হবে।  
 
এর আগে, ব্রাজিল থেকে আমদ‍ানি করা গম নিয়ে সমালোচনায় পড়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়। রেশন হিসেবে দেওয়ার পর পুলিশের বিভিন্ন বিভাগীয় কার্যালয় থেকে ওই গম ফেরত  দেওয়া হয়। সেসময় পুলিশ সদর দপ্তরের লেখা চিঠিতে বলা হয়, ওই গমের আটা দিয়ে রুটি খেলে পেট খারাপ ও পেট ব্যথা হয়। আটা ৩-৪ দিন রাখলে তাতে পোকা ধরে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
এসএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।