ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ফুল চাষে সফল সৈয়দপুরের অ্যাপেলো

মো. আমিরুজ্জামান, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭
ফুল চাষে সফল সৈয়দপুরের অ্যাপেলো অ্যাপেলোর ফুলের দোকান-ছবি:বাংলানিউজ

সৈয়দপুর (নীলফামারী): ফুলের ব্যবসায় সফল নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ফুল ব্যবসায়ী মবিনুল ইসলাম অ্যাপেলো। সঙ্কট ও পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে ফুলের চাষ ও ব্যবসা করে সফলতা দেখিয়েছেন তিনি।

১৯৯৮ সালে সৈয়দপুর শহরে অ্যাপেলো প্রথম ফুলের ব্যবসা শুরু করেন। তার “পাঁপন ফুল বিতান” নামে একটি ফুলের দোকান রয়েছে।

প্রায় ১৬ বছর ধরে এই দোকানে রকমারি ফুল বিক্রি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি।
 
প্রথমে যশোরের গদখালি থেকে ট্রেন ও বাসে করে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, গাঁদা প্রভৃতি ফুল এনে বিক্রি শুরু করেন। নানা কারণে ফুল পৌঁছ‍াতে সময় ও অর্থ ব্যয় হওয়ায় বিকল্প পথ খুঁজতে থাকেন।

অ্যাপেলোর ফুলের বাগান-ছবি:বাংলানিউজ৫/৬ বছর আগে অ্যাপেলো সৈয়দপুরের চাষিদের ফুল চাষের জন্য আগ্রহী করে তোলেন। চাষিদের কাছ থেকে বাজার দরে ফুল কেনার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এরপর ফুলের মোকাম থেকে বীজ ও চারা এনে চাষিদের মধ্যে সরবরাহ করেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শে উপজেলার বেশকিছু এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ফুলের চাষ শুরু করা হয়। মাটি পরীক্ষা করে কোন জমিতে কি ফুল লাগাতে হবে এবং পোকামাকড় দমনে কি কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সে কাজটিও তিনি নিজেই করেন।

উপজেলার নিয়ামতপুর, সোনাখুলি, নতুন বাবুপাড়ায় প্রায় তিন বিঘা জমিতে গ্লাডিওলাস, গাঁদা ও রজনীগন্ধা এবং দিনাজপুরের বিরলে গোলাপের বাগান তৈরি করা হয়েছে। এসব জমি থেকে সরাসরি ফুল কিনে নিজের দোকানেই বিক্রি করছেন অ্যাপেলো।

অ্যাপেলোর ফুলের বাগান-ছবি:বাংলানিউজগ্লাডিওলাস হাজার স্টিক ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, রজনীগন্ধা ও গাঁদা তিন হাজার টাকা গোলাপ প্রতি পিস দুই টাকা হারে চাষিদের কাছ থেকে কিনে থাকেন তিনি। গ্রাহক পর্যায়ে সামান্য লাভ রেখে রকমারি ফুল বিক্রি করেন তিনি। বর্তমানে তার দোকানে চারজন লোক কাজ করে।  

এ বিষয়ে অ্যাপেলো বাংলানিউজকে বলেন, ক্যাটালগ অনুযায়ী রকমারি ফুল দিয়ে বিয়ে বাড়ি, গাড়ি, বাসর ঘরসহ বিভিন্ন সাজসজ্জার কাজ করে থাকি। ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকার বেশি কাজ হয়।

অ্যাপেলো জানান, ২০১১ সালে ইএমই সেন্টার ও স্কুলের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ফুলের সাজসজ্জার কাজ করে সকলের কাছে প্রশংসিত হন তিনি। এর পর থেকে মাঝে মধ্যে তাকে বাইরের জেলাতে গিয়েও কাজ করতে হয়।

অ্যাপেলোর ফুলের বাগান-ছবি:বাংলানিউজতিনি আরো জানান, ফুলের প্রতি তার অগাধ ভালাবাসা। সে কারণে তিনি বাড়ির ছাদেও ৪৫টি টবে বিভিন্ন ফুলের বাগান করেছেন। দৃষ্টিনন্দন এই ছাদ বাগান অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সৈয়দপুরের মাটি ফুলের জন্য অনেকটা উপযোগী। তবে এক্ষেত্রে গ্রিন হাউস করতে পারলে ফুল চাষিদের আর ভয় থাকবে না।

ব্যক্তিগত জীবনে মবিনুল ইসলাম অ্যাপেলো বিবাহিত। স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। পরিশ্রম, অধ্যাবসায় ও সততা থাকলে যে কেউ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, অমর একুশে, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, পহেলা বৈশাখ, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন সময়ে ফুলের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এখানকার উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের ফুল কিছুটা হলেও চাহিদা মেটাতে পারবে বলে মন্তব্য সচেতন মহলের।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭
এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।