ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

গমে ব্লাস্ট রোগ রোধে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭
গমে ব্লাস্ট রোগ রোধে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ‘গমের ব্লাস্ট রোগ: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের বক্তারা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: গমে ব্লাস্ট রোগের ছত্রাক জীবাণুর আক্রমণ রোধ করতে সমন্বিত উদ্যোগ বা গমের নতুন জাত উদ্ভাবন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। আক্রান্ত গম খেত পুড়িয়ে বা কেটে গবাদি পশুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করে এ রোগের সংক্রমণ রোধ করা যাবে না বলেও জানান তারা।

এছাড়া সাময়িকভাবে গমচাষ বন্ধ করাও কোনো কার্যকরী সমাধান নয়। তাই বিদেশি কারিগরি সহায়তায় গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ‘গমের ব্লাস্ট রোগ- প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের বক্তারা।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কৃষি অনুষদের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে গবেষকেরা তাদের গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন।

উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সহযোগী অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহাম্মেদের সঞ্চালনায় সেমিনারের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ ও অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, অত্যাধুনিক ক্রিসপার কাস ৯ জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জিনোম এডিটিং এর মাধ্যমে গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত তৈরি করা হচ্ছে। এতে পরিবেশে জীবাণু থাকলেও তা গমে আক্রমণ করতে পারবে না। গমের এ রোগটি সফলভাবে দমনের জন্য জাতীয়ভাবে একটি সমন্বিত গবেষণা উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে এ রোগটি নতুন কিছু এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। তাই অতিসত্বর কোয়ারেন্টাইনস নিষেধাঙ্গা আরোপ করে আক্রান্ত এলাকাসমূহ থেকে গম বীজ, শষ্য, গাছ, চারা বা অন্যান্য অংশ দেশের অন্যত্র পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ব্লাস্ট নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত দক্ষ গবেষকদের দিয়ে গবেষণা করানো উচিত। যাতে এ নিয়ে কোনো ঝুঁকি থাকলে তা মোকাবেলা করা যায়।
 
অনুষ্ঠানের বক্তারা আরও জানান, দক্ষিণ আমেরিকার গমের এ ভয়াবহ রোগটি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গত বছর বাংলাদেশে দেখা দেয়। এ রোগের জীবাণু বায়োলজিক্যাল সেফটি ৩ ক্যাটাগরিভুক্ত হওয়ায় এটি নিয়ে গবেষণায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কোন এলাকায় এ জীবানুটি ছড়িয়ে পড়লে তা মহামারি আকারে দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলোসহ সারাবিশ্ব আজ উদ্বিগ্ন।

গতবছর গমের ব্লাস্ট রোগ বাংলাদেশে প্রথম দেখা দেয় এবং দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আটটি জেলার প্রায় ১৫,০০০ হেক্টর জমির গম বিনাশ করে। আক্রান্ত জমিতে ৪০-৫০ ভাগ, ক্ষেত্রবিশেষে শতভাগ ফসল নষ্ট হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।