এরপর বিক্রির উদ্দেশ্যে আড়তে জীবন্ত তরতাজা মাছ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু। পাতিলে ভরে পানি ভর্তি প্লাস্টিকের ব্যারেলে উঠানো হচ্ছে মাছ।
আবার অনেকেই পিকআপ বা ভটভটি ভেতর ত্রিফলা দিয়ে ছোট্ট পরিসরে পুকুরের মত বানিয়ে নেন। সেই পানিতে ভরে জীবন্ত মাছ নিয়ে আড়তে ছোটেন। সেখানে পৌঁছামাত্র জীবন্ত তরতাজা মাছ উঠানো হচ্ছে পাল্লায়।
পাল্লার নিয়ন্ত্রণ থাকে আড়তদারের হাতে। তাকে ঘিরে রাখেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা। পাল্লার মাছ উঠানোর আগ থেকেই প্রত্যেক আড়তের লোকজন নানা ভাষায় হাঁকডাক শুরু করেন।
ডাক শুনে ব্যাপারীরাও এ আড়তে ও আড়তে ছোটাছুটি করেন পছন্দের মাছ কেনার জন্য। তাই বহুকাল থেকে সিরাজগঞ্জের আড়ত জীবন্ত তরতাজা মাছের মোকাম নামেই পরিচিত।
সিরাজগঞ্জের গোল চত্বর থেকে বনপাড়া মহাসড়ক ধরে কিছুটা পশ্চিমে গিয়ে মহাসড়ক ঘেঁষে দক্ষিণে এ আড়তের অবস্থান।
প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে ৮ টা এবং ১০ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত এ আড়ত বসে। প্রায় শতাধিক আড়তে বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, সাথিয়া, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, ময়মনসিংহ, মুক্তাগাছা, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছ আসে এখানে।
কৃষাণ রাজবংশী, বিরেণ, বজলার, অনিল, গোপালসহ একাধিক আড়তদার বাংলানিউজকে জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে এ আড়তে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বেচাকেনা হয়। এ আড়তের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সিংহভাগ মাছ জীবন্ত বিক্রি করা হয়। ছোট-বড় প্রায় সব ধরণের মাছ এ আড়তে পাওয়া যায়।
এখানে প্রধানত বিভিন্ন দীঘি, পুকুর, নদীতে বিশেষ পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনকৃত মাছ মৎস্যচাষিরা বিক্রি করতে আসেন। এর মধ্যে পাঙ্গাস, তেলাপিয়া (মনোসেক্স), রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার, বিগহেড, গ্রাসকার্প, চিতল, বোয়াল, বাটা, পুটি অন্যতম। এছাড়া বিভিন্ন ওজনের ইলিশ মাছও এ আড়তে বিক্রি করা হয়।
তারা আরো জানান, এসব মাছ মিনি ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও ভটভটি যোগে আনা হয়। বেশির ভাগ গাড়িতে প্লাস্টিকের ব্যারেলে পানি ভরে মাছ জিইয়ে আনা হয়। তবে কিছু গাড়িতে ত্রিফলা দিয়ে তার মধ্যে পানি রেখে মাছ জীবন্ত রাখার ব্যবস্থা করেন চাষিরা।
এ সব আড়তদাররা জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, বগুড়া, গাজীপুর, নাটোর, খুলনাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা মাছ কিনতে আসেন এখানে। এ আড়ত থেকে জীবন্ত তরতাজা মাছ কিনে স্ব স্ব এলাকায় ফেরেন ব্যাপারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই