ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

পোনা-তেলাপিয়ার দখলে ইলিশের আড়ত!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৭
পোনা-তেলাপিয়ার দখলে ইলিশের আড়ত! ইলিশের আড়তে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া ও পোনা মাছ-ছবি:বাংলানিউজ

চাঁদপুর: ইলিশের রাজধানী নামে খ্যাত চাঁদপুর মৎস্য আড়ত এখন তেলাপিয়াসহ অন্য মাছের দখলে। দুই মাসের জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পাল্টে দিয়েছে আড়তগুলোর চেহারা। এখন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা দাঁড়িপাল্লা আর ক্যাশ বাক্স নিয়ে বসে সময় কাটাচ্ছেন।

শুধু কয়েকটি আড়তে দেখা গেছে, স্থানীয় জলাশয় এবং ডাকাতিয়া নদীতে খাঁচায় চাষ করা তেলাপিয়া এবং পোনা মাছ। এসব মাছ বিক্রি করেই এখন মালিক-শ্রমিকের দৈনন্দিন খরচ মিটছে।

রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ আড়তই ফাঁকা। আবার অনেক আড়তে মালিক শ্রমিক থাকলেও ঝুলে রয়েছে দাঁড়িপাল্লা। অনেকেই গল্প করে অবসর সময় কাটাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর পর আড়তে আসছে স্থানীয়ভাবে চাষকৃত তেলাপিয়া মাছ। এগুলোই হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ইলিশের সবচেয়ে বড় আড়তে ইলিশ শূন্য এই চিত্র বছরের মার্চ-এপ্রিল এই দুই মাসেই দেখা যায়।

ইলিশ শূন্য আড়তে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা-ছবি:বাংলানিউজখুচরা মৎস্য বিক্রেতা আব্দুল আজিজ জানান, পাইকারি তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ১২০ থেকে ২শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই, কাতল ও মৃগেল মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা কেজি। মেঘনায় মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছ আড়তে আসে না।

মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা মো. ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগে জাটকা সংরক্ষণে দুই মাস মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও অনেক ব্যবসায়ী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করতেন না। কিন্তু এখন ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবাই সচেতন এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছেন। এ কারণে ইলিশ শূন্য আড়তে তেলাপিয়া আর পোনা মাছই বিক্রি করা হচ্ছে।

আড়তে সকাল ৮টায় ব্যবসায়ীদের  আসার কথা থাকলেও তারা অনেক দেরি করে আসনে। এই দুই মাস তাদের লোকসান দিয়েই বসে থাকতে হবে।

ইলিশের আড়তে পোনা মাছ-ছবি:বাংলানিউজআরেক ব্যবসায়ী রহমান প্রধানিয়া বলেন, সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু এখন ইলিশ মাছও নেই ক্রেতাও নেই। তবে ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী সময় থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইলিশ আমদানি ছিলো উল্লেখযোগ্য। অসময়ও ইলিশ পেয়েছেন জেলেরা। এ কারণে সবময় আড়তগুলোতে বেচা-বিক্রি ছিল জমজমাট।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জাটকা সংরক্ষণের জন্য মৎস্য ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদের সচেতন করার কারণে প্রকাশ্যে ও গোপনে ইলিশ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া নদীতে জেলেরা নামছেন না। চাঁদপুর জেলার বাইরে থেকে অনেক জেলে জাটকা নিধনের জন্যে এলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার ইলিশের অভায়শ্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময় পদ্মা-মেঘনায় সব ধরনের মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ০৫ মার্চ, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।