ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বরেন্দ্র জুড়েও গলদা চাষের উদ্যোগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
বরেন্দ্র জুড়েও গলদা চাষের উদ্যোগ গলদা চিংড়ির ফাইল ফটো।

ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩ দশমিক ৪১ মিলিয়ন টন মাছ উৎপাদন হয়। মাছের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি ও রফতানির লক্ষে বিশাল বরেন্দ্র এলাকা জুড়ে চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছের আধুনিক অভয়ারণ্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
 

উন্নত পদ্ধতিতে বরেন্দ্র এলাকায় গলদা চিংড়ি চাষ করা হবে। এসব এলাকায় হ্যাচারির মাধ্যমে চিংড়ি পোনা উৎপাদন করা হবে।

এছাড়াও কার্প জাতীয় মাছের পোনা মজুদ করা হবে। এর মাধ্যমে প্রতি একরে ২০০-৩০০ চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে। আটটি জেলার ৬৫টি উপজেলায় ৫৩০ হেক্টর জমিতে বদ্ধ ও মুক্ত জলাশয় হবে মাছের আশ্রয়স্থল। এর  মধ্যে ৩০০ বিল, ৮০ পুকুর ও ১০০ খাল পুনঃখনন এবং মৎস্য অভয়াশ্রম উন্নয়নে ৫০ হেক্টর জমিতে মাছ উৎপাদন করা হবে। এসব স্থানে আলাদা করে থাকবে গলদা চিংড়ি চাষের ব্যবস্থা।
 
এজন্য বরেন্দ্র এলাকায় সরাসরি ২৭ হাজার ২৮০ জন জেলেকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় থাকবে ৬৭৫ জন প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা। চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ চাষের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ১ হাজার ৮৬০টি মৎস্য প্রদর্শনী হবে। ১ হাজার ২০০ নির্বাচিত জেলেকে মাছ ধরার জাল দেয়া হবে।
 
বরেন্দ্র  এলাকায় চিংড়ি উৎপাদন প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, চিংড়ি এখন থেকে বরেন্দ্র অঞ্চলেও চাষ করা হবে। আমরা এসব অঞ্চলে হ্যাচারিতে চিংড়ি পোনা উৎপাদন করবো। ইতিমধ্যেই রংপুর অঞ্চলে চিংড়ি চাষ শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষে উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ির উৎপাদন প্রতি একরে ১২০০ থেকে ২৫০০ কেজি। কিন্তু আমাদের দেশে গলদা চিংড়ির আধুনিক চাষ গুটি কয়েক চাষি ছাড়া ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়নি। এজন্যই প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে পুকুরে চাষ করা হবে গলদা।
 
বরেন্দ্র অঞ্চলে মাছ চাষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বরেন্দ্র অঞ্চলে মাছ চাষ করে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই। এছাড়া রুই, কাতলা, টেংরা, গুলশা, দেশী পুটি মাছও চাষ করবো। ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে রেনু উৎপাদন করে পাবদা মাছ চাষ করা হবে। বরেন্দ্র অঞ্চলে যে এলাকায় যে সব মাছ হয় সেই বিষয়েও গুরত্ব দেয়া হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরেন্দ্র এলাকায় মাছ চাষ কমে যাচ্ছে বলেই আমাদের এই নানামুখী উদ্যোগ।
   
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বরেন্দ্র এলাকার প্রান্তিক জনগণের জীবিকায়নের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি টেকসই জলজ পরিবেশ ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে মাছের বিচরণক্ষেত্রের উন্নয়নও করা হবে।
 
‘বরেন্দ্র এলাকায় মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ৩১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রান্তিক জনগণের জীবিকায়নের সুযোগের পাশাপাশি জেলেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রকল্পটি নেওয়া হচ্ছে।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলে মাছ উৎপাদন কমেছে, সামনে আরো কমবে। বরেন্দ্র অঞ্চলের মোট অায়তন ৭ হাজার ৭৭০ বর্গ কিলোমিটার। পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বরেন্দ্র অঞ্চলে মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এমআইএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।