তবে আগাম জাতের দেশি ও হল্যান্ড আলু উত্তোলনের পর ওই মাঠেই ফের আলু আবাদ করে লাভবান হওয়া যাবে বলে মনে করছেন তারা।
নীলফামারী সদর উপজেলার কঁচুকাটা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ ও শিশুরা দলবেধে ক্ষেত থেকে আগাম জাতের নতুন আলু উত্তোলন করে বস্তায় ভরছেন।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে মাঠ থেকেই আলু কিনে ট্রাকভরে নিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে ওই গ্রামের আলুচাষি রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ৫ বিঘা জমির হল্যান্ড জাতের আলু ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়েছেন ঢাকার দু’জন পাইকারি ব্যবসায়ী। তারা নিজেরাই লোক লাগিয়ে ওই আলু উত্তোলন করে ট্রাকে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা মাঠে দাম পাই না। নিজেরা ট্রাক ভাড়া করে ঢাকায় নিয়ে গেলে দালালের খপ্পরে পড়ে দাম কম পাই। তাই ঝামেলা এড়াতে মাঠেই যা পাই, তাতেই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছি’।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাদা হল্যান্ড জাতের আলু আবাদ করে গত বছর ক্ষেতেই বিক্রি করেছিলাম ৪২ টাকা কেজি। এবার পাচ্ছি ৩৬ টাকা করে’।
ডোমার উপজেলার মুক্তির হাট গ্রামের পলাশ মিয়া বলেন, ‘গতবার মাঠে দেশি আলুতে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা পেলেও এবার পাচ্ছি ৫০ টাকা’।
মাঠে নতুন আলু কিনতে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী সোলেমান আলী বলেন, ‘জমি থেকে আলু তুলে নিতে হচ্ছে, যার খরচ আমাদেরকেই বহন করতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ তো আছে’।
এদিকে সদরের কঁচুকাটা, সোনারায় ও বাবড়িঝাড় এবং কিশোরীগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী, উত্তর দুরাকুটি ও নিতাই এলাকা থেকে আসা আগাম জাতের নতুন আলুতে ভরে গেছে জেলার স্থানীয় বাজারগুলোও। ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে আগ্রহ নিয়ে কিনছেন ভোক্তারাও।
শাখামাছা বাজারের ক্রেতা গৃহিণী আফরোজা বেগম বলেন, ‘নতুন আলুর স্বাদই আলাদা। আধা কেজি করে দেশি লাল আলু ৪০ টাকা ও হল্যান্ড সাদা আলু ২০ টাকায় নিলাম’।
তবে খুচরা আলু বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আগাম আলু চাষাবাদ করে বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক চাষি। এর ওপরে বন্যা হওয়ায় এ বছর বাজারে নতুন আলুর আমদানি হয়েছে দেরিতে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এবার জেলায় প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলুর আবাদ হয়েছে প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমিতে। ওই জমির আগাম আলু তুলে সেখানে আবার আলু লাগাবেন চাষিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
এএসআর