এবার সিংহভাগ জমিতেই আবাদ হয়েছে বিআর-৪৯ জাতের রোপা আমন ধান, বিঘাপ্রতি যার ফলন আসছে ১৬ মণ করে। বর্তমানে বাজারে এ জাতের প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
‘উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার’ খ্যাত বগুড়া জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার কৃষকরা বলছেন, ধানের এ বাড়তি দামে বেজায় খুশি তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশিরভাগ জমির ধান কেটে ক্ষেতেই শুকানো হচ্ছে। ক্ষেতে ক্ষেতে আঁটি বেঁধে নাড়ায় (স্থানীয় ভাষায়) রাখা ধানের সে সোনা রঙ হাসি ছড়াচ্ছে কৃষকের মুখেও। কোথাও কোথাও এখনো মাঠে দাঁড়িয়ে দানাপোক্ত ধান গাছ, মাজা ভেঙে মিশে রয়েছে কোনো কোনো ক্ষেতের মাটিতে। আবার ছোপ ছোপ পানিতেও লুটোপুটি খাচ্ছে অনেক জমির গাছ, মুটি বেঁধে ধানের মাথাগুলো ওপরে তুলে দেওয়া হয়েছে অনেক ক্ষেতে।
প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষক বেনার উদ্দিন। প্রতি বিঘা জমিতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৫০০ টাকা। সে ধান বিক্রি করছেন প্রায় ১৭ হাজার ৬০০ টাকা করে। এ হিসেবে সব খরচ বাদে প্রতি বিঘায় তার লাভ হচ্ছে প্রায় ৬ হাজার ১০০ টাকা। তবে বর্গাচাষিদের বিঘাপ্রতি জমিতে প্রায় ৪ হাজার টাকা বর্গা বাবদ দিতে হওয়ায় তাদের লাভ কম আসছে।
ইকবাল হোসেন, রেজাউল করিম বাবলু, আশরাফ আলীসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমন চাষে আবাদের ব্যয় কাট-ছাট করেও বীজতলা থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে ওই পরিমাণ খরচ হচ্ছে। গাঁও-গেরামের খেটে খাওয়া কৃষকদের হিসেব এটা’।
কৃষক শহিদুল ইসলাম ও সামছুল হক বলেন, ‘রোপা আমন মৌসুমের শুরু থেকেই এবার আবহাওয়া তেমন একটা অনুকূলে ছিলো না। বাড়তি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে হালকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়, দেখা দেয় পোকার আক্রমণও। শেষ সময়ে এসে আবারও বৃষ্টিপাত হয়। তবে উৎপাদিত ফসলের ভালো দাম পাওয়ায় খুবই খুশি আমরা’।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রহিম জানান, চলতি মৌসুমে এ জেলায় আমনের বেশ ভালো ফলন হয়েছে। বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে দামও ভালো পেয়ে লাভবান হচ্ছেন ধানচাষিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
এমবিএইচ/এএসআর