ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

টমেটোয় স্বপ্ন বুনছেন নাটোরের কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৭
টমেটোয় স্বপ্ন বুনছেন নাটোরের কৃষক নিজের সবজি ক্ষেতে সফল চাষি। ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: শীতের টমেটো উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার চাষিরা। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়াসহ বেশি মূল্য পেতে এবার আগাম জাতের টমেটোর চাষ করেছেন তারা। গাছে গাছে থোকা থোকা ফলও ধরেছে বেশ ভালো।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়েই এসব টমেটো বাজারে আসবে বলে আশায় বুক বেঁধে আছেন কৃষকরা। প্রত্যাশামতো সঠিক সময়ে টমেটো তুলে লাভবান হওয়ার স্বপ্নও দেখছেন।

কৃষকরা জানান, গত দীর্ঘ বন্যা আর বৃষ্টিতে বর্ষাকালীন সবজি উৎপাদনে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং মৌসুমের শুরুতেই বেশি মূল্য পেতে বাণিজ্যিকভাবে টমেটোর চাষে নেমেছেন।  

তাদের দাবি, অন্য ফসলের তুলনায় স্বল্প সময়ে শীতকালীন টমেটোর চাষে দ্বিগুণ লাভ হয়। গত কয়েক বছরে ভাগ্য বদলও হয়েছে এ এলাকার অনেক কৃষকের। তাই টমেটোর চাষে আগ্রহ বাড়ছেই।  

এখানকার উৎপাদিত টমেটো স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

কৃষি বিভাগের দাবি, গত কয়েক বছরে টমেটোর বাজার সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছানোয় চাষ বাড়ছে। এ অঞ্চলে আমন ধান ওঠার পর পরই শীতের আগাম জাতের টমেটো উৎপাদন করা যায়। স্থানীয় বাজারে প্রথম দফায়ই বেশি দাম পেয়ে বেশ লাভবান হন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, নাটোর সদর, লালপুর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় টমেটোর বেশি চাষ হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলার ২০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে, আরো ২৬ হেক্টর জমিতে রোপণ চলছে। গত মৌসুমে হয়েছিল ২৬০ হেক্টর জমিতে।  

সরেজমিনে নলডাঙ্গা উপজেলার চেউখালি, শরকুতিয়া, বাঙ্গালখলসী ও মাধনগর এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বাঁশের মাচায় শোভা পাচ্ছে সবুজ টমেটো। চাষিরা ব্যস্ত ক্ষেত নিড়ানি ও পরিচর্যায়, বসে নেই কৃষাণিরাও। কারো কারো জমির আগাম টমেটো তোলার উপযোগী হওয়ায় বিক্রিও শুরু করে দিয়েছেন। বাজারে বিক্রি করে ভালো দামও পাচ্ছেন তারা।  

কৃষকরা জানান, বর্তমানে পাইকারি দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।

চেউখালি গ্রামের এরশাদ আলী জানান, গত ৭ বছর ধরে টমেটোর চাষ করছেন তিনি। গত বছর ৫ কাঠা জমিতে খরচ বাদে ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। এবার ১৬ কাঠা জমিতে চাষ করেছেন। আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে তার উৎপাদিত টমেটো বাজারে উঠবে। তিনি আশা করছেন, এবার বেশি দাম পাবেন।

একই গ্রামের হোসেন আলী, মোবারক আলী ও তাসির উদ্দিন, মাধনগর গ্রামের আয়ুব আলী এবং সমসখলসী গ্রামের আশরাফ আলী জানান, প্রতি বিঘা টমেটো চাষে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা, বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায়।

চারা রোপণের পর ফলন পেতে লাগে মাত্র দুই থেকে আড়াই মাস।  

বেশি দামের আশায় অনেকেই আগাম টমেটোর চাষ করেছেন। তারা আশা করছেন, প্রতি বিঘায় খরচ বাদ দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে লাভ হবে।  

নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আমিরুল ইসলাম জানান, চাষিদের উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড) জাতের টমেটো চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে সিনজেন্টা কোম্পানির সবল জাতের টমেটোর চাষ শুরু হওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে গেছে। এবারও এ উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে ওই জাতের চাষ হয়েছে।  

বাংলা‌দেশ সময়: ০০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।