ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আলুর ক্ষতি পোষাতে কৃষকের আগ্রহ ভুট্টা চাষে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
আলুর ক্ষতি পোষাতে কৃষকের আগ্রহ ভুট্টা চাষে ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষকেরা-ছবি-বাংলানিউজ

রংপুর: গোলাম হোসেন (৭৫) পেশায় কৃষক। বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউপির নাগেরহাটে। প্রতি বছরই তিনি কমপক্ষে ১০-১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতেন। জমি থেকে আলু উত্তোলনের পর সেগুলো বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে রাখতেন। কিন্তু গত বছর আলুর দাম না থাকায় কোল্ড স্টোরেজ থেকে তিনি আলু উত্তোলন করেননি। সব মিলিয়ে তার আলু চাষে ব্যাপক লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর তিনি আলু চাষ না করে ভুট্টা চাষ করেছেন। 

সরেজমিনে বদরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জমিতে ভুট্টা চাষ বেশি করেছেন কৃষকরা। কৃষকরা যে জমিতে আলু চাষ করতেন সেই জমিতে দেখা গেলো ভুট্টার চাষ।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রবি ও খরিপ দুই মৌসুম মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে, যা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ। তবে কৃষি অফিস বলছে, ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা আরও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

পৌর শহরের আলু চাষি পিপুল মিয়া (৩৫) জানান, লোকসানের আশঙ্কায় ২ বিঘা জমির আলু না তুলে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করেছি। এখন ওই জমিতে ভুট্টা চাষ করে আলুর ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও জানান, আলু চাষে প্রচুর খরচ, আবার উৎপাদন অনুযায়ী আলুর দাম না থাকা, আলুতে নানা ধরনের রোগের কারণে কৃষকরা আলু চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে।

পৌর শহরের অপর আলু চাষি লাভলু মিয়া (৩৮) জানান, অনেকেই কোল্ড স্টোরেজ থেকে বাধ্য হয়ে আলু তুলে পরে কম দামে গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি করেছে।

কথা হয় রামনাথপুর ইউপির কিসমত ঘাটাবিল গ্রামের কৃষক মামুন মিয়ার (৪৫) সঙ্গে। তিনি জানান, গত বছর আমি ৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাই এবার আলু চাষ না করে ভুট্টার চাষ করেছি।

তিনি আরও জানান, আলু চাষ করতে অনেক টাকা লাগে সে তুলনায় ভুট্টা চাষে তেমন খরচ নেই, লাভও বেশি।

বদরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কনক রায় জানান, ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। তবে তিনি আলুর ক্ষতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কিছু কিছু জায়গায় আলুতে সমস্যা দেখা দিলেও কৃষি অফিসের সবাই মিলে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গতবারের কোল্ড স্টোরেজে রাখা আলুগুলো এখন আর খাওয়ার উপযোগী নেই। কারণ বাজারে নতুন আলু চলে এসেছে।

বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবর রহমান জানান, গত বছর থেকে আলুতে কৃষকের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। আমরা আলুর রোগের বিষয়ে সঠিক পরামর্শের মাধ্যমে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।