ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

কৃষকের ঘরে ধান, দাম নিয়ে শঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৫ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৮
কৃষকের ঘরে ধান, দাম নিয়ে শঙ্কা ধান কাটার কাজে কৃষক ব্যস্ত কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: দেশজুড়ে খাদ্য শস্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে পুরোদমে শুরু হয়েছে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ। ধান কাটা কাজে কৃষক ব্যস্ত হলেও দাম নিয়ে তারা চিন্তিত। নানা বাধা বিপত্তির পর কৃষক যখন মাঠের ধান ঘরে তুলছে তখনই একদল সুবিধাভোগী কৃষকদের বঞ্চিত করে নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত।

গত বছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা ফসলি মাঠে শুরু করে চলতি বোরো ধান চাষ। চাষাবাদের মধ্যে দেখা দেয় ব্লাস্টসহ বিভিন্ন রোগ-বালাই।

রোগ-বালই থেকে ফসল রক্ষার্থে চাষাবাদে গুণতে হয় অতিরিক্ত খরচা। অনেক স্থানে বৃষ্টিপাতের পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয় কৃষকের ফসল।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলার মোট ১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নিয়ে চাষাবাদ শুরু করে কৃষক। যা পরবর্তীতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এবার প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ দশমিক ৭৫ থেকে ৫ মেট্রিক টন ধান। যা মোট জমির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় প্রায় ৬ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন ধান।

সদর উপজেলার ১০ নম্বর কমলপুর ইউনিয়নের আটোর এলাকার কৃষক মমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও তার ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করেন। চলতি মৌসুমে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করায় গুণতে হয় অতিরিক্ত খরচা। বর্তমানে ধানের যে দাম তাতে চাষাবাদের খরচ উঠায় দায়।

তিনি আরও জানান, সরকার নির্ধারিত দামে ধান বিক্রি করা তাদের জন্য অসম্ভব। তাই স্থানীয় হাট-বাজারে ধান বিক্রি করতে হয়। স্থানীয়ভাবে ধান কাটা-মাড়াইয়ের শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় দেরি করে ধান ঘরে উঠছে।

মমিনুল ইসলাম জানান, শ্রমিক সংকটের কারণে চড়া দামে শ্রমিক নিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে চাষাবাদ ও শ্রমিক খরচ অনুযায়ী কৃষকের মূল্য অনেকটাই গায়ে গায়ে। তাই চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সামনে ঈদুল ফিতর। ঈদে পরিবারের সবাইকে ধান বেচে নতুন কাপড় কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। জমিতে বালাইনাশক ওষুধ দিয়েছি ধার করে। বর্তমানে ধানের যে দাম, তাতে ধারের টাকা পরিশোধ করলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সবাইকে নতুন কাপড় দেওয়া সম্ভব হবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. তৌহিদুল ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। বর্তমানে জেলার প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছে কৃষক। এবার ব্লাস্টের আক্রমণের কারণে ধান উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচা গুণতে হয়েছে তাদের। চলতি মৌসুমে বীজতলা তৈরি থেকে ধান উঠা পর্যন্ত কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক পাশে ছিল। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জেলার ফসলি জমির শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৩ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৮
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।