ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

মঠবাড়িয়ায় ব্রি ধান-৭৪ আবাদে বাম্পার ফলন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
মঠবাড়িয়ায় ব্রি ধান-৭৪ আবাদে বাম্পার ফলন ব্রি ধান-৭৪ আবাদে বাম্পার ফলন। ছবি: বাংলানিউজ

মঠবাড়িয়া থেকে: উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় নতুন জাতের উচ্চফলনশীল ব্রি ধান-৭৪ এর সম্প্রসারণ ঘটেছে। চলতি বোরো মৌসুমে এ জাতের নতুন ধান আবাদ করে মঠবাড়িয়ার মিরুখালী ইউনিয়নের কৃষি ব্লকের ১৫০ জন কৃষক বাম্পার ফলন পেয়েছেন। এবারই প্রথম উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র তিন নম্বর মিরুখালী ইউনিয়নের কৃষকরা এই নতুন জাতের ধানের আবাদ করে আশাতীত সুফল পান। ফলে তারা ব্রি ধান-৭৪ আবাদে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা কৃষি অফিসে সূত্রে জানা গেছে, এবার বোরো মৌসুমে উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় ৮০০ হেক্টর বেশি।

কৃষকরা উচ্চফলনশীল বিনা-১০, ব্রি-২৮, ব্রি-২৬, ব্রি-৪৭ জাতের ধান আবাদের পাশাপাশি উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের কৃষি ব্লকে নতুন জাতের ব্রি ধান-৭৪ আবাদ করেন।

মিরুখালী কৃষি ব্লকের ১৫০ জন কৃষকের মধ্যে এবার মৌসুমের শুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে কৃষক প্রতি তিন কেজি করে ব্রি ধান-৭৪ এর বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ওই ইউনিয়নের ১২ হেক্টর জমিতে এ নতুন জাতের ধানের আবাদ করেন কৃষকরা। সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফসল কাটা শেষে কৃষকরা হেক্টর প্রতি গড়ে ৮ থেকে ৯ টন ধান উৎপাদন করেন। ফলে নতুন জাতের ব্রি ধান-৭৪ আবাদে কৃষকদের মধ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।

মিরুখালী কৃষি ব্লকের বড়শৌলা গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম ও আফজাল হোসেন বলেন, গত মৌসুমে বোরো আবাদে ফসল মার খেয়েছি। এবার বোরো মৌসুমে নতুন জাতের বোরো ধান ব্রি-৭৪ আবাদ করে লাভবান হয়েছি। কৃষকরা সবাই ভালো ফলন পেয়েছেন এ জাতে। ফলে অন্য কৃষকরাও এ ধান আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আশা করছি, আগামী মৌসুমে এ ধানের আবাদ ছড়িয়ে পড়বে।

মিরুখালী কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মঠবাড়িয়ার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে মিরুখালী কৃষি ব্লকে ১২ হেক্টর জমিতে নতুন জাতের ব্রি ধান-৭৪ আবাদ করেন কৃষকরা। কৃষকরা নতুন জাতের ধানে আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন। ফলে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষকদের এ জাতের ধানের বীজ সুরক্ষার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অন্য কৃষি ব্লকের কৃষকদের ব্রি ধান-৭৪ এ আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় আগামীতে তা সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মঠবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ব্রি ধান-৪৭ এলাকায় একেবারেই নতুন জাতের ধান। একটি ইউনিয়নে এবার কৃষকরা এর আবাদ করেছেন। তারা সুফল পেয়েছেন ফলনে। ফলে তাদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চলতি বছর মঠবাড়িয়ায় আউশ ও আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের তুলনায় ২০ ভাগ বেশি। যা ব্রি ধান-৭৪ আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

বোরো মৌসুমে এ ধান আবাদে ১৪০ দিনের মধ্যে ফলন আসে। ব্রি ধান-৭৪ আকারে লম্বাটে ও মোটা। প্রতিটা ধানের ছড়ায় ১৪০ থেকে ১৫০টি ধান ফলে। এবার এ ধানে বাম্পার ফলন হওয়ায় অন্য ইউনিয়নগুলোর কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আগামী বোরো মৌসুমে এ জাতের ধানের আবাদে সম্প্রসারণ ঘটাতে কৃষি বিভাগ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।