ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

মাঠজুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের দোলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
মাঠজুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের দোলা হেমন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা আমন ধান, ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: কাঁচা-পাকা ধানের ডগায় আলগোছে পা ফেলে নামছে শিশির। শিশির বিন্দু ঝরার টুপটাপ শব্দ আর মৃদু শীতলতা চারিদিকে বয়ে চলেছে।

কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সকালের সোনারোদ। হেমন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা আমন ধান।

মাঠের পাকা ধান কেটে তুলতে হবে গোলায়। সে কাজেই ব্যস্ত খুলনার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকেরা।

ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরে উঠছে ফসলের ক্ষেত। আর ক'দিন পরেই শুরু হবে পুরোদমে ধান কাটা, মাড়াই আর ঘরে তোলার মহোৎসব। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হবে ধান তোলার পালা। মাঠের পর মাঠজুড়ে সোনালি কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি খেত যেন দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে।  

শনিবার (১৭ নভেম্বর) খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার খারাবাদ গ্রামের কৃষক মো. নূরুল আমীন শেখ বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামের কড়িয়াভিটা, নাংলাদাহ বিলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুরূপভাবে আশপাশের গ্রামেও ধানের ভালো ফলন হয়েছে।  

তিনি জানান, এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ তেমন একটা ছিলো না। যথাযথ পরিচর্যাসহ সময়মতো সার ব্যবহারে বাম্পার ফসল উৎপাদিত হয়েছে।  

রূপসা উপজেলার জাবুসা গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, এ বছর খরা ও বন্যা তেমন ছিলো না। যে কারণে গত বছরের চাইতে ফলনও ভাল হয়েছে। আমরা এখন ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের সচিব হারুন-অর-রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, মাঠজুড়ে এখন কৃষকের ফলানো সোনারঙ ধানের ছড়াছড়ি। দিগন্তজোড়া মাঠ সেজেছে যেন হলুদ-সবুজ রঙে। চারিদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে মৌ মৌ গন্ধ। বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

কৃষি অধিদফতর খুলনা সূত্রে জানা যায়, এবার খুলনা জেলায় রোপা-আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ হাজার ১৯২ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ৯২ হাজার ৪২৫ হেক্টর।  
এরইমধ্যে খুলনা মেট্রোর দৌলতপুরে ৭০ হেক্টরের বিপরীতে ৭৫ হেক্টর ও লবণচরায় ২০০ হেক্টরের বিপরীতে ২০০ হেক্টর, রূপসা উপজেলায় ৩ হাজার ২৮০ হেক্টরের বিপরীতে ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর, ডুমুরিয়ায় ১৫ হাজার ৯১২ হেক্টরের বিপরীতে ১৫ হাজার ৭০০ হেক্টর, কয়রায় ১৫ হাজার ৫২৫ হেক্টরের বিপরীতে ১৫ হাজার ৭৭০ হেক্টর, বটিয়াঘাটায় ১ হাজার ৬৪৮ হেক্টরের বিপরীতে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর, তেরখাদায় ৫২০ হেক্টরের বিপরীতে ৫৫০ হেক্টর, দিঘলিয়ায় ১ হাজার ৭৭০ হেক্টরে বিপরীতে ১ হাজার ৭৭০ হেক্টর, পাইকগাছায় ১৭ হাজার ২০ হেক্টরের বিপরীতে ১৭ হাজার ১০০ হেক্টর,  দাকোপে ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টরের বিপরীতে ১৮ হাজার ৯০০ হেক্টর, ফুলতলায় ১ হাজার ১৫ হেক্টরের বিপরীতে ১ হাজার ২৬০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, এবার জেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলে আনতে কৃষক এখন প্রস্তুত। কোনো কোনো কৃষকের ঘরে আমন ধান উঠতে শুরু করেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।