ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বাম্পার ফলনেও বিপাকে মানিকগঞ্জের মুলা চাষিরা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
বাম্পার ফলনেও বিপাকে মানিকগঞ্জের মুলা চাষিরা! ক্ষেত থেকে মুলা উত্তোলনের পর তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক পরিচর্যায় মুলার বাম্পার ফলন হয়েছে মানিকগঞ্জে। তবে উপযুক্ত বাজারদর না থাকায় মুলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ফলে বাম্পার ফলনের পরও মুখে হাসি নেই মানিকগঞ্জের মুলা চাষিদের।

মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলাতেই আবাদ হয় সবজির। তবে মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া, সিংগাইর এবং ঘিওরে সবজির আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি।

আগাম সবজি চাষে বেশ লাভবান হলেও শেষদিকের সবজি চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। সবজির বাজারদর ভালো না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মুলা চাষিরা।

জমি থেকে মুলা উত্তোলন করে বাজারজাত করা পর্যন্ত যে পরিমাণ টাকা ব্যয় হয়, মুলা বিক্রি করে সেই টাকা উত্তোলন করতেই অনেক চাষিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান একাদিক চাষি। হুট করেই মুলার দাম কমে যাওয়ায় এবং স্থানীয় ও পাইকারি বাজারে মুলার চাহিদা না থাকাতেই ‘কাঙ্ক্ষিত’ এ ফসল নিয়ে বিপাকে আছেন চাষিরা।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাট্টিগ্রাম এলাকার সবজি চাষি হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত দুই জন শ্রমিক নিয়ে জমি থেকে ১২৫ আঁটি (চার পিচে এক আঁটি) মুলা তুলেছেন তিনি। পরে তা পানিতে পরিষ্কার করে ব্যাপারির কাছে বিক্রি করেছেন মাত্র দুইশ’ টাকায়। এতে মুলা চাষে খরচ বা লাভ দূরের কথা, তা বাজারজাত করার শ্রমের মূল্যও উঠবে না বলে জানান তিনি।  দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর জন্য রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে মুলা।  ছবি: বাংলানিউজসবজি চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, ভুট্টার সঙ্গে চার বিঘা জমিতে মুলার আবাদ করেছেন তিনি। ফলনও হয়েছে বেশ। চারজন শ্রমিক নিয়ে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার আঁটি করে মুলা তুলে বাজারজাত করেন তিনি। এজন্য খাবার খরচ বাদেও শ্রমিক প্রতি তাকে গুনতে হয় চারশ’ টাকা করে। এতে করে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত মুলা বিক্রি করতে পারেন তিনি। মুলার বাম্পার ফলনেও হিসেবের খাতায় লাভের কোন টাকা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সবজি ব্যবসায়ী এখলাছ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার জমি থেকে মুলা ক্রয় করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার, সুইচ গেইট ও চৌরাস্তা এলাকায় বিক্রি করনে তিনি। শীতের শুরুতে মুলাসহ অন্যান্য সবজির বেশ চাহিদা ছিলো ওইসব এলাকায়। শীতের শুরুতে প্রতি আঁটি মুলা ৮ থেকে ১০ টাকা করে পাইকারিভাবে ক্রয় করার পরেও বেশ লাভবান ছিলেন। কিন্তু এখন সেই মুলা ৩ থেকে ৪ টাকা আঁটি ক্রয় করেও তেমন লাভ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে মুলার। আগাম সবজি চাষে মুলার বাজারদর বেশ ভালো ছিলো। বর্তমানে বাজারদর তুলনামূলক কম হলেও শেষদিকে আবার মুলার দাম বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
কেএসএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।