ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

মৃতপ্রায় মহানন্দা, বিপাকে ধান চাষিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৯
মৃতপ্রায় মহানন্দা, বিপাকে ধান চাষিরা সেতুর দু’দিকে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: পাহাড়ি নদী মহানন্দা, ভারতের মালদহ জেলার ওপর দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ভোলাহাট এলাকা দিয়ে। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পাঁচ উপজেলা হয়ে গোদাগাড়ীর কাছে পদ্মায় গিয়ে মিশেছে। নদীর উজানে একাধিক বাঁধ দেওয়ায় অসংখ্য চর পড়েছে বাংলাদেশের ভেতরে। থেমে গেছে স্রোত, পরিবেশ হয়েছে বিপন্ন। নদীর দু’পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকাও থমকে গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর জুড়ে নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর বীরশ্রেষ্ঠ সেতুর দু’পাশে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে ইরি-বোরোর আবাদ।

সেতুর দু’দিকে এখন প্রায় দুই হাজার হেক্টর ফসলের জমি। সেতু নির্মাণের সময় নদী শাসন করতে গিয়ে সংকুচিত হয়ে পড়েছে মহানন্দা। প্রতিবছরই বাড়ছে চর এলাকা। চরের কারণে নদীর মূল প্রবাহ একেবারেই থেমে গেছে। ফলে মাছ চাষে ভাটা পড়েছে। সেতু সংলগ্ন বারঘরিয়া এলাকার প্রায় হাজারখানেক জেলে পরিবার বেকার হয়ে পড়েছেন।

পানির সংকটে ভুগছেন ভোলাহাট, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর, নাচোল ও নবাবগঞ্জ সদরের মানুষেরা। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ পাঁচ উপজেলার কৃষি ব্যবস্থা। বিশেষ করে গোমস্তাপুর, নাচোল ও নবাবগঞ্জ সদরের বরেন্দ্রভূমিতে তীব্র সেচ সংকট শুরু হয়েছে। নদীপাড়ের ১৪টি সেচ ক্যানেল বন্ধ হয়ে আছে। ফলে এ তিন উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির ধান শুকিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে মহানন্দা নদীর পানির গভীরতা কোথাও ১ ফুট, কোথাও ৬ ইঞ্চি। নদীর পানি কমে যাওয়ায় এসব এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নিচে নেমে গেছে। চাঁপাই শহরের প্রায় সব টিউবয়েল অকেজো হয়ে পড়েছে। তীব্র পানি সংকটে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, মহানন্দা নদীতে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ, লালগোলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে মালদহ পর্যন্ত লঞ্চ-স্টিমার চলতো। সে মহানন্দা আজ মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। লঞ্চ-স্টিমার দূরের কথা, এখন নৌকাও চলে না। পাগলা ও পুনর্ভবার মতো শাখা নদীগুলোও শুকিয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।