ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

নেই ধানের দাম, শ্রমিক সঙ্কটে মাঠে নারী-শিশু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
নেই ধানের দাম, শ্রমিক সঙ্কটে মাঠে নারী-শিশু

নেত্রকোণা: কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো বা ফসল রোগাক্রান্ত আর ফলন মন্দা। এদিকে শ্রমিকের অধিক মজুরি দেওয়ার পর বাজারে মেলে না ধানের ন্যায্যমূল্য।

সুদিনের আশায় কৃষকেরা বারবার স্বপ্ন দেখে ফসল বুনে। কিন্তু সুদিনের আর দেখা হয় না উল্টো তারা হন ক্ষতিগ্রস্ত।

চলতি মৌসুমে ধানের ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম কম। অপরদিকে, অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দাবিতে সৃষ্টি হয়েছে শ্রমিক সংকট। এ অবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে ঘরে ফসল তুলতে শ্রমিকের কাজ করতে মাঠে নেমে পড়েছে ঘরের নারী-শিশুরা।

ষষ্ঠ এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলিম ও নাজিম উদ্দিন। তারা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের রহিম উদ্দিনের ছেলে। বাবার সঙ্গে ধান কেটে ঠেলাগাড়িতে তুলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলো। এসময় তাদের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।

দুইভাই বাংলানিউজকে জানায়, বাবাকে বলতে শুনেছি বাজারে প্রতিমণ ধানের দাম মাত্র ৪০০ টাকা। আর আড়াই মণ ধানের দাম (১ হাজার টাকা) দিয়ে একজন শ্রমিক নেওয়া সম্ভব নয়। তাই মা-বাবা আর আমরা নিজেরাই মাঠে নেমেছি।

ধান বোঝাই ঠেলাগাড়ি ঠেলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন দুই গৃহবধূহ।  ছবি: বাংলানিউজ

একই গ্রামের কৃষক ইলিয়াস মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, মাত্রাতিরিক্ত পারিশ্রমিক দাবিতে শ্রমিক সঙ্কট ও বাজারে ধানের ন্যায্যমূল্য না থাকায় লোকসানে পড়ে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েছে কৃষকেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও গ্রামের এক গৃহবধূ বাংলানিউজকে বলেন, শ্বশুর বাড়িতে এসে রাস্তা দিয়ে কোনোদিন ঠেলাগাড়িতে ধান টেনে নিতে হয়নি। পরিস্থিতি আজ এখানে নিয়ে এসেছে। যে পরিমাণ পারিশ্রমিক শ্রমিকদের দাবি আর বাজারে ধানের যে দাম তাতে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে কৃষক বাঁচবে না।

আরেক কৃষক শের আলম বাংলানিউজকে বলেন, এ বছরই শেষ চাষাবাদ আর করবো না। তবে মনে রাখা জরুরি কৃষক না বাঁচলে খাদ্যাভাবে দেশ চরম হুমকির মুখে পড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।