ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ধানের দাম কমলেও চালের বাজার স্থিতিশীল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
ধানের দাম কমলেও চালের বাজার স্থিতিশীল ধান মাড়াই করতে ব্যস্ত কৃষক।

ঢাকা: ধানের দাম কমলেও চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকার কারণে নতুন চাল বাজারে না আসায় সব ধরণের চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর মিরপুর কয়েকটি পাইকারি বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য।

ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।

তবে মিলারদের গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকায় আপাতত চালের দাম কমার সম্ভাবনা কম।

এ ব্যাপারে কচুক্ষেত বাজারের রজনীগন্ধা মার্কেটের পাইকারি চাল বিক্রেতা মেসার্স রামগঞ্জ ট্রেডার্সের কাজী সরোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। ধানের উৎপাদন বেশি হলেও সহসাই চালের দাম কমছে না। মিলারদের কাছে প্রচুর মজুদ রয়েছে। তারা সেগুলো বিক্রি করার পরেই নতুন চাল বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ২৮-চাল প্রতি বস্তা ১৭শ’ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট নতুন চাল ২২শ’ টাকা বস্তা এবং পুরানটা ২৪শ’ টাকায়, স্বর্ণা পারি ৫০ কেজির বস্তা ১৩শ’ ৮০ থেকে ১৪শ’ টাকায়। এছাড়া গুটি চাল ১৩শ’ ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পোলাওয়ের চাল প্রকার ভেদে তিন হাজার ৯০০ টাকা  থেকে চার হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান কাজী সরোয়ার হোসেন। খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরিফুল রহমান অপুমেসার্স মামুন রাইস এজেন্সির মালিক হারুন-অর-রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, রমজান মাসে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। ধানের দামের সঙ্গে চালের বাজারের হিসাব মিলবে না। মিলাদের কাছে প্রচুর চাল মজুদ রয়েছে। তাই নতুন ধানের দাম কমার সঙ্গে বাজারে কোনো প্রভাব পড়ে না বলেও তিনি মনে করেন।

এ ব্যাপারে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরিফুল রহমান অপু বাংলানিউজকে বলেন, দাম চাইলেই কমানো সম্ভব না। বাংলাদেশে ওপেন ইকোনমি মার্কেট। এখানে চাইলেই হ্স্তক্ষেপ করতে পারি না। দাম কমা বা বাড়াটা সাপ্লাই এবং চাহিদার ওপর নির্ভর করে। সাপ্লাই বেশি থাকলে দাম কমবে আর সাপ্লাই কম থাকলে দাম বাড়বে।  

তিনি বলেন, এবার আমন উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৬০ লাখ টন যা হওয়ার কথা ছিল এক কোটি ৩০ লাখ টন, বোরো হওয়ার কথা ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ টন, যা হয়েছে দুই কোটি টন, আউশ ৩০ লাখ টনসহ মোট চাল উৎপাদন হয়েছে ৪ কোটি টন। যেখানে আমাদের চাহিদা ২ কোটি ৪০ টন।

আরিফুল ইসলাম অপু আরও বলেন, জনসংখ্যা অনুসারে প্রতিজন যদি ৪শ’ গ্রাম চাল দৈনিক খায় তাতেও ১৬ কোটি মানুষের চাল প্রয়োজন হবে ২ কোটি ৪০ লাখ টন। আর হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল যদি আরও ৬০ টনও খায় তাতেও সব মিলিয়ে ৩ কোটি টন। তারপরও চাল থাকছে ১ কোটি টন।

তিনি বলেন, মিলাররাই বা ধান কিনে কোথায় রাখবে? তাদের মিল ভর্তি চাল। আমাদেরও ২৬ লাখ টন চাল গুদামে রয়েছে, তারপর আমরা ১০ লাখ টন চাল কিনবো। তাই সরকারের উচিত কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ সমস্যার সমাধান বের করতে হবে। কীভাবে চাল বিদেশে রফতানি করা যায়।  

তিনি আরও বলেন, নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী রেখে বাকিটা রফতানি করতে হবে। চালের দাম আমাদের দেশে অনেক কম। বিদেশে মোটা চালও ১ কেজি এক/দেড় ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় কেজি প্রতি ১শ’ টাকার ওপরে পড়ে। সেই তুলনায় আমাদের দেশে চালের দাম অনেক কম।  

চালের দাম কমলে কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চালের দাম কমাটা ভালো লক্ষণ নয়। এমনিতে বর্তমানে বাজারে চালের দাম কম রয়েছে। বর্তমানে পাইকারি বাজারে মোটা চাল ঢাকায় ৩৩ টাকা, রাজশাহীতে ২৯ টাকা, সিলেটে ৩২ টাকা, ‍খুলনায় ২৭ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এর চাইতে কম হলে কৃষক বাঁচবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪২ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
এসএমএকে/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।