ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আউশের উৎপাদন কমবে ৩ লাখ মেট্রিক টন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৯
আউশের উৎপাদন কমবে ৩ লাখ মেট্রিক টন ফাইল ফটো

ঢাকা: বোরো ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আউশের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন কৃষকেরা। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধানের বদলে প্রায় দেড়লাখ হেক্টর জমিতে অন্য ফসল ফলিয়েছেন তারা। আবার যেটুকু জমিতে ধান চাষ হয়েছে, তাও ক্ষতির মুখে পড়েছে বন্যায়।
 

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ ইউএসডিএ-এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মৌসুমে আউশ ধানের উৎপাদন ৩ লাখ মেট্রিক টন কমে যাচ্ছে।

সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ৭৮ হাজার ৮০৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে চলতি মাস আগস্টে উঠতে যাওয়া আউশ ধানও রয়েছে।

জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে আষাঢ়েই বন্যা শুরু হয় দেশে। ৯৩টি নদীর ২৫টি পয়েন্টে পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে। প্লাবিত হয় দেশের ২৮টি জেলা।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ ইউএসডিএ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে ১১ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও কৃষকেরা আউশ আবাদ করেছেন ১০ লাখ হেক্টর জমিতে। আগের বছর ২০১৮-১৯ আউশ আবাদের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। আউশের আবাদ কমেছে দেড়লাখ হেক্টর জমিতে।

বোরো ধানের লোকসান কাটিয়ে উঠতে কৃষক পাট, ভুট্টা ও সবজি চাষে ঝুঁকছেন বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি শ্রমিক ফেডারেশনের অর্থ সম্পাদক গোলাম ছরোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, বোরো ধানে কৃষক মার খেয়েছেন। এ কারণে তারা ফসল চাষের ধরণ পাল্টাচ্ছেন। চেষ্টা করছেন পাট, ভুট্টা ও সবজি চাষের। যাতে মুনাফা ধানের চেয়ে বেশি হয়। যদি কোনো কৃষকের ৫ বিঘা জমি থাকে, তাহলে সে দুই বিঘায় ধান চাষ করছে। বাকি ৩ বিঘায় অন্যান্য ফসল।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদন বলছে, বন্যা আর কৃষকের ফসল পরিবর্তনের কারণে এবছর আউশের উৎপাদন নেমে আসবে ২২ লাখ মেট্রিক টনে। আগের বছরের চেয়ে উৎপাদন কম হবে ৩ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ বছরের কৃষকেরা ২৫ লাখ মেট্রিক টন আউশ ধান উৎপাদন করেছিলেন।

তবে বাম্পার ফলনে বোরো ধানের উৎপাদন ৫ লাখ টন বেড়েছে। ২০১৯-২০ বছরে বোরো ধানের উৎপাদন বাড়বে ৫ লাখ মেট্রিক টন। চলতি বছরে বোরো ধানের উৎপাদন হবে ১ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। আগের বছর বোরোর উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার মেট্রিক টন।

উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাস রয়েছে আমন ধানেও। এক লাখ মেট্রিক টন বাড়লে মোট উৎপাদন হবে এক লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। আগের বছরে উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।

চলতি বছরের মে থেকে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত দেশে চালের মোট উৎপাদন দাড়াবে ৩ কোটি ৫২ লাখ মেট্রিক টনে। ২০১৮-১৯ বছরে উৎপাদন হয়েছিল ৩ কোটি ৪৯ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন বাড়বে ৫ লাখ মেট্রিক টন।

চলতি বছর মিলারদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামে ১০ লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ ও দেড়লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার কথা ছিল সরকারের। যা মোট বোরো উৎপাদনের ৬ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে উৎপাদনের ১ শতাংশ মাত্র ৪ লাখ মেট্রিক টন ধান।

ইউএসডিএ বলছে, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের এই লক্ষ্যমাত্রা বাজারের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে কোনো ভূমিকাই রাখছে না। উৎপাদন খরচের চেয়ে ১০-১২ টাকা কমে ধান চাল বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে মিলারদের কাছে বা খোলা বাজারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৯
এসই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।