ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় চাল রপ্তানি করা যাচ্ছে না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় চাল রপ্তানি করা যাচ্ছে না অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার কারণে বিদেশের বাজারে রপ্তানি করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। 

বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্নের সিনিয়র প্রফেসার ও অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারন্যাশনাল রিসার্স সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ইউলিয়াম আর্মস্টাইনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।  

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের চাল প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে আছে।

ফলে আমাদের আফ্রিকান দেশগুলোতে চাল রপ্তানি করতে হবে। সেখানেও একটু সমস্যা রয়েছে। সে দেশগুলোতে যেতে হয় ডোনারদের মাধ্যমে। আশা করছি এক লাখ টনের মতো চাল ফিলিপাইনে যাবে। তারা পাঁচ হাজার টন এলসি করেছে। এ পাঁচ হাজার টন চাল যদি ভালো হয় বাকি ৯৫ হাজার টন দ্রুত নেবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যারা পুরান থাইল্যান্ড, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম তাদেরই সমস্যা হচ্ছে চাল রপ্তানিতে। আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে না থাকায় ভালো সাড়া পাচ্ছি না। তবে চেষ্টা করছি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে।  আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে না থাকায় ভালো সাড়া পাচ্ছি না।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া প্রধান লক্ষ্য ছিল। ধান আমাদের মূল খাদ্য শস্য। কৃষকরা ধানের দাম পাচ্ছে না। এটা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। চাষিরাও বিক্ষুব্ধ। এ প্রেক্ষিতে আমাদের দিক থেকে কৃষিকে বহুমুখী করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি অনেক দিন থেকে। কিন্তু আমাদের জমি বাড়ছে না। নতুন নতুন শিল্প কারখানা, রাস্তা-ঘাট তৈরির কারণে জমি কমে যাচ্ছে। তাই কম জমি ব্যবহার করে বেশি উৎপাদন করা যায় সে প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে।  

মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আমাদের সাফল্য স্বপ্নের মতো। ইতোমধ্যে আমরা কৃষির বহুমুখীকরণের সাফল্য পেতে শুরু করেছি। ডালের উৎপাদন কীভাবে বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য পটুয়াখালী, খুলনা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, বরগুনাসহ কোস্টাল এলাকাতে ডালের উৎপাদন বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। আগে আমাদের ডাল হতো দুই থেকে তিন লাখ টন এখন উৎপাদন বেড়ে হয়েছে আট লাখ টন। আগে পটুয়াখালীতে কোনো ডাল হতো না এখন সেখানে দুই লাখ টন মুগ ডাল হচ্ছে। ফলে মুগ ডালের দাম কমেছে।

তিনি বলেন, ফেলন ডাল দেশের মানুষ গ্রহণ করেছে। এখন এ ডালের উন্নত জাত দিতে চাই। এজন্যই অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিরা এসেছে। তারা একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের ৩০ কোটি টাকা দিচ্ছে ডালের জাত উন্নয়নের জন্য। এ জাতগুলো উন্নত করতে ও প্রকল্প পরিচালনায় তারা এটা ব্যয় করছে। এ খাতে সরকার ২০ শতাংশ ব্যয় করে। আমরা কানাডা থেকে ডাল আমদানি করি। তারা আমাদের উন্নত জাত উৎপাদনে সহায়তার করছে। আমরা যদি রপ্তানি বাড়াতে পারি তাহলে অনেক কিছুই রপ্তানি করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদের বলেছিলাম বায়োটেকনোলজির রিসার্সে আরও নতুন নতুন দামি দামি প্রযুক্তি আসছে। তারা আমাদের বলেছে সেগুলো তোমাদের কেনার দরকার নেই। তোমরা আগে সক্ষমতা বাড়িয়ে পুরনো বায়োটেকনোলজির ব্যবহার করো। এজন্য আমাদের দরকার ভালো বিজ্ঞানীর, যাতে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি আছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারি। এতো দামি যন্ত্রপাতি কেনার প্রয়োজন নেই। সরকার কৃষকদের সহযোগিতার জন্য যে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি নেপালে আমরা ভুট্টা রপ্তানি করেছি। ফলে ভুট্টার দাম একটু বেড়ে গেছে। আমাদের দক্ষিণ এলাকায়ও ভুট্টা উৎপাদনের উপযোগী স্থান। যেমন আগে ভুট্টা হতো ১৩ লাখ টন বর্তমানে ৪৬ লাখ টন হচ্ছে। এগুলো ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন পোল্ট্রি ফার্মে ও পশ খাদ্য হিসেবে। আমরা উৎপাদন বাড়িয়েছি। এখন অনেকটা ভুট্টায় স্বংয়সম্পূর্ণ। বর্তমানে আমাদের চাহিদা রয়েছে ৬০ লাখ টন। আমাদের মাত্র ১২ লাখ টন আমদানি করতে হয়।

উল্লেখ্য, আমাদের ভালো দিক হলো রপ্তারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ শতাংশ। এরমধ্যে কৃষিপণ্য রয়েছে ৩৪ শতাংশ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯ 
জিসিজি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।