ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এবার শিবগঞ্জে আমের উৎপাদন কম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এবার শিবগঞ্জে আমের উৎপাদন কম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আমের উৎপাদন কম হয়েছে। এ বছর ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমির আম উৎপাদনের সম্ভব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ লাখ নয় হাজার মেট্রিক টন আর উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৪৩.৭৫ মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আম চাষিরা বাগানের পরিচর্যা ঠিকমতো না করার জন্য এ বছর আমের উৎপাদন কম হয়েছে। ঠিকমতো আম বাগান পরিচর্যা করলে আগামীতে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

আম চাষিরা জানান, বিগত কয়েক বছর আমের দাম বেশি না পাওয়ার কারণে বাগান ঠিকমতো পরিচর্যা করা হচ্ছে না। বাগান পরিচর্যা করে যদি খরচ না ওঠে তাহলে কিভাবে আম বাগান পরিচর্যা করবো? এছাড়া আম মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎপাদন খরচও ওঠানো সম্ভব হচ্ছে না। মৌসুম শেষে আমাদের কোনো অতিরিক্ত অর্থ জমা থাকে না।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল খান শামীম বাংলানিউজকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাইরে অন্য জেলার আম উৎপাদনের জন্য কয়েক বছর ধরে শিবগঞ্জের আমের দাম কম হচ্ছে। আর বাজার দর কম পাওয়ার কারণে আম চাষিরা বাগান পরিচর্যা ঠিকমতো করছেন না। আম বাগান ঠিকমতো পরিচর্যা না করার কারণে মূলত আম উৎপাদন কম হচ্ছে। যদি আম বাগান ঠিকমতো পরিচর্যা করে তাহলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আম বাগান পরিচর্যা ঠিকমতো করতে হবে। পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণের পরামর্শ নিয়ে আম উৎপাদনের ফর্মুলা প্রয়োগ করতে হবে। আধুনিকায়ন পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে বাগান পরিচর্যা করতে হবে। আম উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পুরানো বাগানগুলো প্রুনিং করতে হবে। বাগান পুলিংয়ের মাধ্যমে আম উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়া কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে নতুন আম বাগান তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনের পুরাতন আম গাছ কেটে ফেলে নতুন গাছ লাগাতে হবে। এর পাশাপাশি আধুনিক বাগান তৈরি করতে হবে।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম আমিনুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, এ বছর শিবগঞ্জে ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি আম উৎপাদনের সম্ভব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ লাখ ৯ হাজার মেট্রিক টন কিন্ত চাষিরা ঠিকমতো আম বাগান পরিচর্যা না করায় ৪২ হাজার ৯৫৬.২৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন কমে উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৪৩.৭৫ মেট্রিক টন।

গেল মৌসুমে ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমির মধ্যে ১০ হাজার ৫৩৮.৭৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন জাতের ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টি আম গাছে গুটি আসে। আর হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ৭ দশমিক ৬ মেট্রিক টন।

কৃষিবিদ এসএম আমিনুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আম বাগান ঠিকমতো পরিচর্যা না করার কারণে মূলত আম উৎপাদন কম হচ্ছে। যদি আম বাগান ঠিকমতো পরিচর্যা করা হয় তাহলে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি আম চাষিদের বাগান পরিচর্যার মাধ্যমে আম উৎপাদন বৃদ্ধি করতে। চাষিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছি। এছাড়া আম বাগান পলিং এবং নতুন প্রজাতের গাম উৎপাদনের জন্য চাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যেনো আগামী আম মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আমের উৎপাদন বেশি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।