ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

করোনায় বোরো কৃষকের লাভ কমেছে ৪০ শতাংশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২০
করোনায় বোরো কৃষকের লাভ কমেছে ৪০ শতাংশ ফাইল ছবি

ঢাকা: কর্মক্ষেত্রের বিচারে কৃষিখাত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ক্ষেত্র। করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুত্থানেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে এই কৃষিখাত।

করোনাকালে পড়েছে বোরো ধান কাটার সময়, যে বোরো বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ চাষযোগ্য জমিতে আবাদ করা হয়। আর সে কারণেই বোরো ধানের চাষ, উৎপাদনে করোনার প্রভাব ঠিক কতেখানি তা বোঝার কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে।

বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ২ হাজার ৮৩৪ জন বোরো কৃষকের ওপর একটি গবেষণা করেছে।

সোমবার (০৬ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন বিআইজিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নারায়ণ দাস।

গবেষণায় উঠে এসেছে – কৃষকেরা করোনাকালে শ্রমিক সংকট, পণ্য পরিবহন ও আর্থিক টানাপোড়েনের মতো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। যদিও গত বছরের বছরের তুলনায় এ বছরের ফলনও প্রায় একই রকম আছে, তবুও এ সব সমস্যার কারণে বোরোর উৎপাদন কৃষকের প্রত্যাশিত পরিমাণের চেয়ে সাত শতাংশ (প্রতি একরে চার মণ) কমেছে। কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ, কৃষককে বাড়তি মজুরি দিতে হয়েছে ১৭ শতাংশ।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শতকরা ৯৯ জন কৃষককেই তাদের ধান সরকার নির্ধারিত ১০৪০ টাকা মণের চেয়ে কম দরে বিক্রি করতে হয়েছে। এসব কারণে কৃষকের প্রত্যাশিত লাভের পরিমাণ কমে গেছে ৪০ শতাংশ। হিসাবমতে, পুরো দেশে প্রত্যাশিত উৎপাদনের চেয়ে ৪.৮২ কোটি মণ বোরোর উৎপাদন কমেছে, যার অর্থমূল্য ৩,৬৮৭ কোটি টাকা।

ড. নারায়ণ দাস বলেন, গবেষণায় অংশ নেওয়া কৃষকেরা গড়ে ৭৬৫ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করেছেন। ৮০ শতাংশ কৃষক যারা ৯০০ টাকার বেশিতে প্রতি মণ ধান বিক্রি করতে পেরেছেন, তারা দাম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কৃষকেরা যাতে ফসলের ন্যায্য মূল্য পান সেদিকে নীতিনির্ধারকদের মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

সারা দেশে কৃষককে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এই গবেষণাটি করা হয়েছে। ড. নারায়ণ দাসের নেতৃত্বে বিআইজিডির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সাইফুল ইসলাম ও সিমাব রহমান এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেছেন।

গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল-বোরো চাষীদের উৎপাদন, ব্যয় ও লাভের ওপর করোনা প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভ করা, কৃষকের সমস্যা নিরুপণ ও সমস্যার উত্তরণে প্রয়োজনীয় উপায় খুঁজে বের করা।

বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন বলেন, কৃষিতে সরকারি ঋণের সঠিক সরবরাহ প্রক্রিয়া তৈরিতে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এখানে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। খুব দ্রুতই সরবরাহ প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের উদ্যোগী হতে হবে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কৃষি অর্থনীতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার মণ্ডল, এসিআই সিড এর বিজনেস ডিরেক্টর সুধীর চন্দ্র নাথ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিআইজিডির সিনিয়র উপদেষ্টা এম মুশাররফ হোসেন ভুইয়া ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। গবেষক, নীতিনির্ধারক ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।