ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আউশের ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০
আউশের ফলনে কৃষকের মুখে হাসি বাম্পার ফলন হয়েছে আউশ ধানের/ ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: চট্টগ্রামের কৃষি প্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলার ফসলের মাঠে শুরু হয়েছে আউশ ধান কাটার উৎসব। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

আউশের ফলন দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি।

এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হওয়ায় আউশ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। মীরসরাই উপজেলার কৃষকরা উন্নত জাতের (ব্রি. ধান-৪৮) আউশ ধান চাষ করে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ফলন পেয়েছেন।

তবে উপজেলার ১৬নং সাহেরখালী ইউনিয়নের আউশের আবাদ বেশি হয়েছে বলে জানা যায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ১ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা হলেও আবাদ করা হয় ৭ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৫ হাজার ২শ’ মেক্ট্রিক টন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশাবাদী কৃষি অফিস।

অতীতের মতো স্থানীয় জাত ও উন্নত জাতের ধান বীজ অনেকেই বিশেষত চরাঞ্চলের কৃষকেরা চাষাবাদ করে থাকেন। ধান বীজগুলো কাজলআইল, চিনালধান, ভিন্নাতোয়া, ধলবাচাই, বৈলাম, আশ্বিনী, নাজিরআইল, বাধই, হলোই ধান, বাতুইধান, জিইস ধান ও পাইজম ধান ইত্যাদি।

সরকারি ধান বিএডিসি, বেসরকারি বীজ কোম্পানির মধ্যে সুপ্রিম সিড কোম্পানি, লালতীর, পাশাপাশি, মল্লিকা সিড, আলফা অ্যাগ্রো, ইউনাইটেড, এসিআই, অটো ক্রপকেয়ারের উল্লেখযোগ্য বি-৪৮, বি-২৮, বি-৪৩, বি-৭২ নং ধানের বীজগুলো ভালো ফলন দিয়েছে। মূলত হাইব্রিড ধান বীজ যে কোন মৌসুমে ভালো ফলন দিয়ে থাকে।

এ উপজেলার কৃষকরা আউশ মৌসুমে স্থানীয় জাতের বীজ আবাদ করতেন। এ জাতের আউশ ধানের ফলন খুবই কম হওয়ায় কৃষকরা আউশ ধান আবাদে দিনে দিনে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন। চলিত মৌসুমে আউশের বাম্পার ফলন হওয়ায় আউশ চাষে কৃষকরা আগামীতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হবেন বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

এদিকে উপজেলার ৯নং মীরসরাই সদর ইউনিয়নের গড়িয়াইশ গ্রামের (কৃষি বিষয়ক ক্লাব) আইপিএম ক্লাবের সভাপতি আউশ চাষি হানিফ ভুঁইয়া ও সজল দেবনাথ বলেন, আমাদের বাপ-দাদাদের আমল থেকে আমরা আমাদের চাষের জমি থেকে ধান বীজ সংগ্রহ করে সাধারণ চাষাবাদ করতাম। এতে সমস্যা হলো বিভিন্ন ধরনের মিশ্রিত ধান হতো এবং ফসলও কম হতো। ফলে আধুনিক চাষাবাদের তাল মিলিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির উন্নতমানের হাইব্রিড ধান বীজ সংগ্রহ করে ভালো ফলন ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছি।

১৩ নং মায়ানী ইউনিয়নের ঘড়ি মার্কেট এলাকার কৃষক মো. জসিম জানান, সার, বীজ, কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ফসল যাই হোক না কেন বিগত বছরগুলোতে কৃষকরা ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, এই উপজেলার কৃষকরা পূর্বে স্থানীয় আউশ ধানের আবাদ করতেন। এই বছর সরকার কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা ও বীজ, সার দিয়ে চাষীদের উৎসাহিত ও সহযোগিতা করেছে। এতে কৃষকেরা উৎসাহিত হয়ে ব্যাপক চাষ করেছেন এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০ 
এসএএইচডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।