ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ধানের হিটস্ট্রোক: জমিতে ২-৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখার পরামর্শ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
ধানের হিটস্ট্রোক: জমিতে ২-৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখার পরামর্শ ফাইল ফটো

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বোরো ধান হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য সেসব এলাকায় পরবর্তী করণীয় হিসেবে জমিতে ২-৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখাসহ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ধান বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (১০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বোরো ধানের যে সব জাত ফুল ফোটার পর্যায়ে আছে বা এখনও ফুল ফুটছে বা সামনে ফুল ফুটবে সে সব জমিতে পানি ধরে রাখতে হবে। ধানের শীষে দানা শক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২-৩ ইঞ্চি দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে। এছাড়া ঝড়ের কারণে ব্যাকট্যারিয়াজনিত পাতাঝরা (বিএলবি) বা পাতায় লালচে রেখা (বিএলএস) রোগের আক্রমণ হতে পারে। আক্রান্ত হলে ৬০ গ্রাম এমওপি, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম দস্তা সার ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে পাঁচ শতাংশ জমিতে বিকেলে স্প্রে করতে হবে। তবে ধানের থোড় বের হওয়ার আগে বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত পাঁচ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করলেও ভালো ফল পাওয়া যাবে। এ রোগ দেখা দিলে অবশ্যই ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।

সংস্থাটির নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বোরো ধানের এ পর্যায়ে নেকব্লাস্ট রোগের আক্রমণ হতে পারে। এরোগ হওয়ার পরে দমনের সুযোগ থাকে না। তাই ধানের জমিতে এ রোগ হোক বা না হোক শীষের মাথা বের হওয়া পর্যায়ে প্রতিবিঘা জমিতে ৫৪ গ্রাম টুপার/ ৭৫ ডব্লিউপি/ দিফা ৭৫ ডব্লিউপি /জিল ৭৫ ডব্লিউপি এবং ৩৩ নেটিভভা/ট্রাইসাক্লাজল গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ৬৪ লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে বিকেলে ৫-৭ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

এ সময় জমিতে বাদামি ঘাসফড়িংয়ের আক্রমণ হতে পারে। আক্রমণ এলাকায় কীটনাশক মিপসিন ৭৫ ডব্লিউপি, প্লাটিনাম ২০ এসপি বা অনুমোদিত ওষুধের বোতল বা প্যাকেটে উল্লেখিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে। কীটনাশক অবশ্যই গাছের গোড়ায় ব্যবহার করতে হবে। এজন্য ডাবল নজল বিশিষ্ট স্প্রেয়ার ব্যবহার করা উত্তম।

গত রোববার সারাদেশে কালবৈশাখী ঝড়ের পাশাপাশি গরম বাতাস প্রবাহিত হয় বিভিন্ন এলাকায়। এরপর পর্যবেক্ষণ ও ক্ষতির কারণ পরিদর্শনকালে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অধিকাংশ জমির ধান কাঁচা থোড় থেকে ফুল আসা পর্যায়ে রয়েছে। যেসব জমির ধান ঝড়ের দিন ফুল ফোটা অবস্থায় ছিল তার কিছু কিছু জমির ৫-১০ শতাংশ শীষ প্রথমে সাদা ও পরবর্তীতে কালো বর্ণ ধারণ করে চিটা হয়ে গেছে। সবেমাত্র বের হওয়া শীষ উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা সংবেদনশীল থাকে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, ধানের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চতাপমাত্রার কারণে বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হলেও ফুল ফোটা পর্যায়ে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির বেশি হলে ধানে চিটা দেখা দেয়। গত মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধানে চিটা দেখা দেয়। এ ধারাবাহিকতায় এপ্রিলেও উচ্চতাপমাত্রার সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ধান চিটা হয়ে যায়।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, এ‌প্রিল ১০, ২০২১
জিগিসি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।