ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

৩ হাজার টমেটো গাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
৩ হাজার টমেটো গাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

বাগেরহাট: বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় এক কৃষকের তিন হাজার ফলন্ত টমেটো গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।  

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) গভীররাতে কচুয়া উপজেলার বিশারখোলা মাঠে কৃষক দাউদ মৃধার ক্ষেতের গাছগুলো কেটে দেওয়া হয়।

 

অসংখ্য ফলধরা গাছ কেটে ফেলায় প্রায় আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কৃষক দাউদ মৃধা। গেল বছরও দাউদ মৃধা ও তার ভাইয়ের টমেটো গাছ কেটেছিল দুর্বৃত্তরা। শুধু দাউদ মৃধা ও তার ভাই নয়, গেল দুই বছর ধরে বিশারখোলা ও গজালিয়া এলাকার অন্তত ২০ জন কৃষকের টমেটো গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক দাউদ মৃধা বলেন, ৭৪ শতক জমি লিজ নিয়ে খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্ট করে তিন হাজার গাছ লাগিয়েছিলাম। জমি প্রস্তুত, ঘুরি দেওয়া, রোপণ ও সারসহ দুই লাখ টাকার ওপরে ব্যয় হয়েছে। ১৫ দিন পরেই এসব গাছ থেকে টমেটো বিক্রি করতে পারতাম। তিন হাজার গাছে অন্তত আট লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারতাম। আমাকে একদম শেষ করে দিয়ে গেল।  

কে বা কারা কেন কেটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে দাউদ মৃধা বলেন, এ টমেটোই আমার সব। রাত জেগে পাহারা দিই। শীত লাগার কারণে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে বাড়িতে যাই। বুধবার সকালে এসে দেখি সব গাছ কাটা। কে কাটছে জানি না। আমাকে আর্থিকভাবে শেষ করে দেওয়ার জন্যই এ কাজ করেছে তারা।  

শ্রমিক মো. রুহুল আমিন বলেন, দাউদ ভাইয়ের টমেটো খেতে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে আমিও বেশ কয়েকদিন কাজ করেছি। একটি টমেটো গাছে ফল আসা পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে যায়। যখন ফল বিক্রির সময়ে এল, তখনই এ কাজ করল। যারা এমন কাজ করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।

দাউদের প্রতিবেশী কৃষক আলী আকবর বলেন, একজন কৃষকের কাছে ফসল সন্তানের মত। যার গাছ কেটেছে, একমাত্র সেই বুঝতেছে কী ক্ষতি হয়েছে।  

স্থানীয় মোস্তফা দরানী ও আলী আকবর দরানী বলেন, শুধু এবার নয়, দুই বছর ধরে গজালিয়া ও বিশারখোলা এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিভিন্ন লোকের ফলন্ত গাছ কেটে ন্ষ্ট করছে। গেল বছরও দাউদ ও তার ভাই ওয়াদুদ মৃধাসহ অন্তত ২০ জনের টমেটো গাছ কেটেছে চক্রটি। স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে এ দুষ্টচক্রকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।

ওয়াদুদ মৃধার স্ত্রী সুখি খানম বলেন, রাত আড়াইটা পর্যন্ত আমার ভাসুর (দাউদ মৃধা) টমেটো ক্ষেতে ছিলেন। যারাই গাছ কাটুক, তারপরে কেটেছে। এত অল্প সময়ে একজন বা দু্ইজন মানুষের পক্ষে এত গাছ কাটা সম্ভব নয়। যারা কেটেছে, তারা একসঙ্গে অন্তত পাঁচ-সাতজন এসেছিল। গাছ কাটার সময়, আমার ভাসুরকে (দাউদ মৃধা) পেলে মেরেও ফেলতে পারত। যে কোনো মূল্যে এ চক্রটিকে খুঁজে বের করার দাবি জানাচ্ছি।  

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
জেডএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।