ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

সরিষার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

কৌশিক দাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
সরিষার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি হলদে সরিষাক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

বান্দরবান: অনুকূল আবহাওয়া আর রোগবালাই কম থাকায় বান্দরবানে ভালো হয়েছে সরিষার আবাদ। মৌ-মৌ সুগন্ধে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। অন্যদিকে এবছরও সরিষার আবাদ ভালো হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ির বেশিরভাগ জমিতে এখন চাষ হচ্ছে সরিষার। প্রতিবছর অল্প কিছু সংখ্যক জমিতে সরিষা চাষ হলে ও এবছন নূতনভাবে বেশ কিছু চাষ শুরু করেছে সরিষার আবাদ।  

প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হওয়ায় দ্রুত বেড়ে উঠেছে সরিষার গাছগুলো, আর কয়দিন পরেই শুরু হবে জমি থেকে সরিষা তোলার কাজ। এদিকে ভালো ফলনের সম্ভাবনায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। বান্দরবানের সুয়ালক সুলতানপুরের সরিষা চাষি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে অল্প অল্প করে সরিষা চাষ শুরু করি, এবছর বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকার কারণে আমি প্রায় ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি, গাছে ফলন ও বেশ ভালো আশা করছি এবার ভালো লাভবান হবো। রেইচা এলাকার সরিষা চাষি করিম উল্লাহ বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এবার ভালো ফলন ও হয়েছে, আশা করছি ভালো লাভবান হবো। গতবছর প্রতি মণ সরিষা ৩ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি করেছি, এবছর বাজারে সরিষার ভালো চাহিদা রয়েছে। তাই আশা করছি, এবছর ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবো।  

রোয়াংছড়ির তারাছা এলাকার চাষি ক্যসাউ মারমা বলেন, আমি প্রতিবছর সরিষার চাষ করি, এতে করে আমার জমির যেমন উর্বরতা বাড়ে তেমনি আমি আমার জমি থেকে উৎপাদিত সরিষা দিয়ে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করে আসছি এবং এবছর আমি সরিষা থেকে মধু সংগ্রহ করার জন্য ৪-৫টা বক্স ও বসিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি এখান থেকে সরিষা এবং মধু দুটোই পাবো এবার।  

এদিকে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াতে মাঠপর্যায়ে নানা ধরনের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক।  তিনি বলেন, সারা দেশের তুলনায় পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সমতল ভূমির পরিমাণ খুবই কম। এর কারণে এখানে একই জমিতে বারবার চাষাবাদ করতে হয়, এতে করে জমির উর্বরতা কমে যায় তাই আমরা বার বার আবাদ করা জমির উর্বরতা বাড়াতে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগের সহায়তায় বান্দরবান জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষার আবাদ এবং উৎপাদন দুইটাই বেড়েছে। আমরা চাই এলাকার কৃষক যাতে তাদের নিজেদের উৎপাদিত সরিষা থেকে তেল পরিশোধন করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিক্রি করে লাভবান হয়।  

বান্দরবান কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গতবছর বান্দরবানে সরিষার আবাদ হয়েছিল ১০২ হেক্টর যা এবছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯ হেক্টর আর গতবছর ১৩০ মেক্টিক টন সরিষার উৎপাদন হলেও এবছর ১৫৫ মেক্টিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।