ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

খুলনায় চিন্তিত বোরো চাষিরা!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
খুলনায় চিন্তিত বোরো চাষিরা!

খুলনা: ঘন কুয়াশা, মাঝে-মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বেড়েছে মাঘের শীতের দাপট।

সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে গেলেও কাটছে না কুয়াশার চাদর। গত দুই দিনে খুলনায় সূর্যের দেখা মেলেনি বললেই চলে। ফলে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি।

দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে। খুলনার বিভিন্নস্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। এ বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বোরো চাষিরা। বীজতলায় ‘কোল্ড ইনজুরি’র আশঙ্কা করছেন তারা।

কৃষকরা জানান, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড শীতে বীজের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। এ অবস্থা আরও কিছু দিন থাকলে বোরো ধান রোপণে শঙ্কা রয়েছে।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নের বুনারাবাদ গ্রামের বোরো চাষি সমরেশ রায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘পাঁচ থেকে ছয় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ায় বীজতলা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। ’

একই উপজেলার বারভূঁইয়া মিজানুর রহমান নামে আরেক চাষি বলেন, ‘পাতো (ধান গাছ) দুই থেকে তিন ইঞ্চি হয়ে গেছে। বৈরী আবহাওয়ায় বীজতলায় এক ধরনের পোকা আসে তাতে পাতো (ধান গাছ) আক্রান্ত হয়। ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে বোরো চাষে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি। ’

উপজেলার ৪ নম্বর সুরখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সুজয় রায় সুজিত বলেন, এ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে কৃষক অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। অতিরিক্ত শীতের কারণে বীজ ও চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ চারাগুলো পরবর্তীতে লাগানো হলেও এতে ফসল হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ডুমুরিয়ার আরশনগরের হোসেন নামে আরও এক চাষি বলেন, বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এখন জমি তৈরি করে চারা লাগাবো। কুয়াশার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।

বৈরী আবহাওয়ায় বোরো আবাদ যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি তরমুজের স্বর্গরাজ্য খ্যাত খুলনার দাকোপ উপজেলার চাষিরা তরমুজের বীজ বোপণ করতে পারছেন না।

সিটি বুনিয়া গ্রামের গৌতম নামে এক কৃষক বলেন, বৃষ্টি, শীত ও কুয়াশার কারণে আমরা তরমুজের বীজ বোপণ করতে পারছি না। এতে তরমুজ চাষ পিছিয়ে যাচ্ছে।

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৬০ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এর চেয়ে বেশি বোরো আবাদ হবে। এ বৈরী পরিস্থিতিতে কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের বীজতলা রক্ষায় সার্বক্ষণিক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে বীজতলা এবং চারা নষ্ট না হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনার উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বোরো চারাতে ঠাণ্ডা বেশি পড়লে ‘কোল্ড ইনজুরি’ হয়ে যায়। ‘কোল্ড ইনজুরি’ যাতে না হয় তার কিছু পদ্ধতি আছে। সেগুলো কৃষকদের বোঝাচ্ছি। বীজতলা শেষ হয়ে গেছে। এখন চারা লাগাচ্ছেন কৃষকরা। যে জমিতে পানি থাকে না সে জমির চারা ‘কোল্ড ইনজুরি’তে আক্রান্ত হয় বেশি। তবে এখন পর্যন্ত কোল্ড ইনজুরির কোনো খবর পাইনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
এমআরএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।