ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বোরো ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২২
বোরো ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক বোরো ধানের ক্ষেত।

বরিশাল: আর মাত্র কয়েকদিন বাদে শুরু হবে বোরো ধান কাটার মৌসুম। আগাম জাতের ধান ইতোমধ্যে পাকতে শুরু করেছে।

কিন্তু ধান কাটা শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে, এমনটি আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ফলে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার কৃষকরা ঘরে ধান তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ৮শ ১৮ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। তবে ৯ হাজার ৮শ ২৭ হেক্টর জমিতে ইতোমধ্যেই চাষাবাদ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ হেক্টর জমি বেশি। উপজেলা কৃষি বিভাগ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪৮ হাজার ১৪৮ মেট্রিকটন চাল। ক্ষেতে চলতি বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ভালো ফলন হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে গত দুই বছরে গোপলগঞ্জ, ফরিদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, শরণখোলা, মোড়লগঞ্জ জেলা-উপজেলার ধান কাটা শ্রমিকরা আসেননি। এবারও বেশির ভাগ শ্রমিকরা আসবে না বলে জানিয়ে দেয় কৃষকদের। ফলে আগৈলঝাড়ার ধান চাষ করা কৃষকরা পড়েছেন মহাবিপদে। শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান বেশ ভালো হয়েছে।  

কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা মনে করছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগ-বালাই না থাকায় ধানের অনেক ভালো ফলন হবে।  

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে আগাম জাতের ধান পাক ধরেছে। হয়তো আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে এসব ধান কাটা শুরু হবে।  

কৃষকরা বলছেন, উপজেলাজুড়ে ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। কিন্তু এবার কী হবে? সময় মতো শ্রমিকরা না এলে কীভাবে ধান ঘরে উঠবে এমন দুশ্চিন্তায় তাদের দুচোখে ঘুম নেই! 

উপজেলার গৈলা গ্রামের খলিলুর রহমান, কালুপাড়া গ্রামের পশিম সন্যামত, মধ্য শিহিপাশা গ্রামের জালাল সরদার, কোদালধোয়া গ্রামের নবীন হালদারসহ একাধিক কৃষকরা বলেন, আমন আবাদে ধান পাকার পরেও ধান কাটতে হাতে কিছু সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুমে নানান রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। ফলে ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গেই কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়। কয়েক বছর ধরে এমনিতে ধানের আবাদে নানা কারণে লোকসান গুনতে হয়েছে। এই মৌসুমেও যদি শ্রমিক সংকটে সময় মতো ধান ঘরে তোলা না যায় তাহলে ব্যাপক লোকসানের কবলে পড়তে হবে। তাই ধান ঘরে তুলতে কৃষি শ্রমিকদের আসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান বেশ ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগ-বালাই না থাকায় ধানের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দিতেন। কিন্তু দুই বছর করোনা ভাইরাসের কারণে ধান কাটা শ্রমিক আসেনি। এবার শ্রমিকরা যাতে এসে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে পারেন সে ব্যাপারে বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২২
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।