ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

কিশোরগঞ্জে আগাম আলু তোলার ধুম, দামে খুশি কৃষকরা

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
কিশোরগঞ্জে আগাম আলু তোলার ধুম, দামে খুশি কৃষকরা

নীলফামারী: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আগাম আলু তোলার ধুম পড়েছে। আলুর ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন কৃষকরা।

তবে একসঙ্গে সবাই আলু তোলার ফলে কৃষি শ্রমিকদের জন্য বাড়তি মজুরি গুণতে হচ্ছে। এবছর আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূলে থাকায় কিশোরগঞ্জসহ জেলার অন্যান্য আলু চাষিরা খোশ মেজাজে রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ কৃষি অফিস জানায়, সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে এবছর আগাম জাতের আলুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্ত কৃষকরা আরও বেশি জমিতে আলু চাষ করেন। আলু লাগানোর পরপরই বৃষ্টিতে কৃষকের কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হলেও আর বড় কোনো বিপদ আসেনি। এরপর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি আলু ৬০/৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুঠির কৃষক আনারুল ইসলাম জানান, আমি এবার ১৫ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছি। এরমধ্যে ২ বিঘা জমির আলু তুলে পাইকারের কাছে বিক্রি করেছি। ২ বিঘায় কীটনাশক, আলু বীজ, সার, মজুরি বাবদ ৫০ হাজার টাকা বাদ দিয়েও আমার লাভ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।

উপজেলার সর্বত্র নারী-পুরুষ শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে আলু তুলছেন। এ ক্ষেত্রে পুরুষ শ্রমিককে দৈনিক ৪০০/৫০০ টাকা ও নারী শ্রমিককে ১৫০/২০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। অনেক কৃষক ক্ষেতেই পাইকারি দরে আলু বিক্রি করছেন। এই আলু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে পাঠানো হচ্ছে।

উপজেলার দুরাকুঠি গ্রামের আদর্শ আলু চাষি আলম হোসেন জানান, আগাম জাতের আলু চাষে অভাবী এলাকা কিশোরগঞ্জের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে গেছে। কৃষকরা যেমন স্বনির্ভর হচ্ছেন, তেমনি শ্রমিকরা কৃষিকাজ পেয়ে ভালোভাবে দিন কাটাচ্ছেন। এই আলুর আবাদ না হলে এলাকায় অভাব দেখা দিত।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, আগাম জাতের আলু আবাদে চাষিরা খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। অন্যান্য ফসলে উৎপাদন ও দামে মার খেলেও এই আলু আবাদে লাভবান হচ্ছেন কিশোরগঞ্জের মানুষ। প্রতিবছর এই আলু আবাদের পরিধিও বাড়ছে।  

আগাম আলু উৎপাদনের সুতিকাগার হিসেবে পরিচিত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ। পতিত ও উঁচু জমিতে এসব আলু আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। একসময় এসব জমিতে কাঁশবন হতো। এখন উপজেলার কৃষকদের আয়ের প্রধান উৎস আলু চাষাবাদ। ১৯৯০ সালে উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের এক কৃষক বাড়ির পাশের জমিতে খাওয়ার জন্য আগাম আলুর চাষাবাদ শুরু করেন। ভাল ফলন পাওয়ায় সেখান থেকে এই অঞ্চলের কিশোরগঞ্জ উপজেলাসহ আশেপাশের এলাকায় আগাম আলু চাষাবাদ শুরু হয়। রোপণের ৫৫ দিনের মাথায় নতুন আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা পাইকারি হিসেবে আলু কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন। সর্বত্র নারী- পুরুষ সবাই মনের আনন্দে জমি থেকে আলু তুলছেন।

বাং লাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।