ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মনের গণ্ডিতে আলো জ্বালার প্রত্যয়ে ঢাবির সঙ্গীত উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৯
মনের গণ্ডিতে আলো জ্বালার প্রত্যয়ে ঢাবির সঙ্গীত উৎসব ঢাবির দু'দিনব্যাপী সঙ্গীত উৎসব/জিএম মুজিবুর

ঢাকা: সঙ্গীত আমাদের শুদ্ধ পথে চলতে সাহায্য করে। মনের কালো দূরীভূত করে সেখানে আলোর স্পর্শ আনে। সঙ্গীতের এ প্রভাব তাত্ত্বিকভাবেই স্বীকৃত। তাই তো সেই সঙ্গীতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, মনের কালো দূরীভূত করে আলোকে আনতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সঙ্গীত বিভাগের আয়োজনে শুরু হলো দু'দিনব্যাপী ‘সঙ্গীত উৎসব-২০১৮’।

রোববার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।  

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক টুম্পা সমাদ্দর, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল ও ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী।

আয়োজনে শুরুতেই সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত কণ্ঠে পরিবেশন করেন 'জয় হোক, শান্তির জয় হোক' এবং 'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি' গান দু’টি। এরপর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানসহ অন্য অতিথিরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান টুম্পা সমদ্দার। তিনি বলেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আমাদের মনের কালিমা দূর করে সামনে এগোনোর প্রেরণা জোগায়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এমন একটি মাধ্যম, যা আমাদের খারাপ থেকে দূরে টেনে এনে শুভ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে আখতারুজ্জামান বলেন, এ বছর আয়োজনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এমন উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এ আয়োজন এবারই প্রথম। এছাড়া এবারের উৎসবে নতুন রং আছে, নতুন সুর আছে। উৎসব উৎসবের মতোই হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আদি অকৃত্রিম। আর এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা আশা করি তা আরও ফলপ্রসূ হবে। বাংলার মানুষ অনেক উদার ও মানবিক। কারণ তাদের মধ্যে সুর আছে। যাদের মাঝে সুর থাকে, রং থাকে, তারা মানবিক হয়। সুরের ধারা যত বহমান হবে জাতি এগিয়ে যাবে।

ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী বলেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ অবদান আছে এবং তারা এক্ষেত্রে কাজ করে চলেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আজকের যে সংযোগ, তা অনন্য।

বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল বলেন, সঙ্গীত বর্তমানে একটি দুঃসময় পার করছে। এখন রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, লোকগীতি, বাউল গানকে এখন ফিউশন করে সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু একটি সৃষ্টির মধ্যে অন্য একটি সুর ও অন্য একটি গানের মধ্যে নিয়ে ফিউশন গ্রহণযোগ্য না। একইসঙ্গে গানের বাণীরও অবক্ষয় হচ্ছে। এমন সময়ে এ উৎসব শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চাই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে সম্মেলক সঙ্গীত নিয়ে হাজির হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রিয়াঙ্কা গোপ ও স্বরূপ হোসেনের পরিচালনায় তারা দু’টি রাগ পরিবেশন করেন।

এরপর মঞ্চে আসেন অসিত দে, স্বর্ণময় চক্রবর্তী, মোহাম্মদ শোয়েব, ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী এবং শ্রীলঙ্কার ড. চিন্তাক প্রগীত মেড্ডেগোডা। তারা তাদের কণ্ঠে নিবেদন করেন শুদ্ধসঙ্গীতের বন্দনা। আয়োজনে এসরাজ পরিবেশন করেন অধ্যাপক শুভায়ু সেন মজুমদার এবং সেতার পরিবেশন করেন ফিরোজ খান। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে শুদ্ধসঙ্গীতের এ আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৯
এইচএমএস/এসএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।