ঢাকা: গত এক সপ্তাহ ধরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাকারদের দখলে রয়েছে। সার্ভার উদ্ধারে বিষয়টি নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সিকে চিঠি দিয়েছেও বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৫ মার্চ) একটি সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
হ্যাকারদের এ দাবি পূরণ না করলে বিমানের প্রায় ১০০ গিগাবাইট তথ্য নিজেদের ব্লগে সবার জন্য উন্মুক্ত করবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। হ্যাকারদের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী বিমান কর্তৃপক্ষের হাতে সময় আছে আর তিনদিন।
জানা যায়, র্যানসমওয়্যারের (এক ধরনের ভাইরাস) মাধ্যমে হ্যাকাররা সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) হ্যাকারদের মুক্তিপণ দাবির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমানের ই-মেইল সার্ভার বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মিডিয়া বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করেছে। সার্ভার বিষয়ে কোনো ধরনের মুক্তিপণ দাবি করেনি হ্যাকাররা। বিকল্প ব্যবস্থায় বিমান তাদের মেইল চালু রেখেছে।
র্যানসমওয়্যার হচ্ছে এক ধরনের ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রোগ্রাম বা ম্যালওয়্যার, যা কোনো কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ডিভাইসে সংরক্ষিত তথ্যে ঢুকতে বাধা দেয়। এই ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হলে ডিভাইস বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা এতে থাকা তথ্য চুরি করে নিতে পারে ম্যালওয়্যারটি ছড়ানোর পেছনে থাকা হ্যাকাররা। বিমানের ই-মেইল সার্ভার র্যানসমওয়্যার আক্রান্ত হওয়ায় যাত্রীদের পাসপোর্টের বৃত্তান্ত, কর্মী ও অন্যান্য উড়োজাহাজ সংস্থার তথ্য ছাড়াও ফ্লাইট, মালপত্র ও সব ফ্লাইটের ক্রুদের বিষয়েও তথ্য রয়েছে হ্যাকারদের হাতে।
বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছে, হ্যাকারদের ব্যবহৃত র্যানসমওয়্যারকে চিহ্নিত করার জন্য বিমান ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সিকে চিঠি দিয়েছে। তবে, সেখানকার আইটি বিশেষজ্ঞরা যেসব বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর রাখছেন, তা ক্রমাগত পরিবর্তন হতে থাকায় একে আলাদা করা বা এর জন্য দায়ীদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। বিমানের ই-মেইল সার্ভারে হামলা চালানোর জন্য যে ম্যালওয়্যার ব্যবহার হয়েছে, তার নাম জিরো-ডে অ্যাটাক। ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থার আইটি কর্মকর্তা ও তদন্ত কর্মকর্তারা আগে কখনও এ ধরনের ম্যালওয়্যার দেখেননি। এর আগে ২০২২ সালে বিমান আরও একবার ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছিল।
এ বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাদের সার্ভার হ্যাকড হয়নি, ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছিল। সার্ভারটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে করে ই-মেইল সেবায় কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। তবে তার সমাধান করা হয়েছে। সার্ভার হ্যাকড ও অর্থ দাবির বিষয়টি নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
এমকে/জেডএ