ঢাকা: বিরাজমান নানা সমস্যা উল্লেখ করে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে পাওনা ১২ হাজার কোটি টাকার বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বেসরকারি বিমান পরিচালনা সংস্থা নভো এয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অ্যাভিয়েশন অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এওএবি) সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
বৈঠকে বিমানের বিরুদ্ধে কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন, অসম প্রতিযোগিতা, অভ্যন্তরীণ রুটে বিলাসবহুল এয়ারক্রাফট ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন তিনি।
দেশের বাজার থেকে হারিয়ে যাওয়া এয়ারলাইন্সগুলো নিয়ে তিনি বলেন, যারা ডিফল্টার হয়ে গেছে, এরা কেন ব্যর্থ হলেন এ বিষয়ে কোনো স্টাডি আছে কিনা আমার জানা নেই। তাদের উচিত এ নিয়ে স্টাডি করা। আমরা সমস্ত ইন্টারন্যাশনাল কম্পলায়েন্স মেনে ফ্লাইট ক্যারি (পরিচালনা) করি৷
ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ফ্লাইট লন্ডন যায়। কিন্তু, ঢাকা-সিলেট রুটে এক মাস বিমান ফ্লাইট বন্ধ করায় বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো ৩ গুণ ভাড়া বাড়িয়েছিল। বরিশাল রুটে সবাই ফ্লাইট বন্ধ করেছে, আমাদের ফ্লাইটটা চালু আছে। আমাকে সব কিছু মিলিয়েই তো দেখতে হবে। আমাদের ইন্টারন্যাশনাল, ভি-ভিআইপি, হজ ফ্লাইট চালাতে হয়। কাজেই অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটি সঠিক নেই। এখানে বিমানের সাথে বেসরকারি এয়ারলাইন্সের কোনো তুলনাই হয় না।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বিমানের তরফ থেকে চলতি বছরে ১৪২ জনকে হজে পাঠানো হয়েছে। যারা বিভিন্ন এজেন্সিকে টাকা দিয়ে মার খেয়েছে। এটা তো আমরা রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবেই করেছি। এগুলো তো আমাকে হিসেব করতে হবে৷ বার বার বলা হচ্ছে বিমান লসে আছে। আমরা বোয়িংয়ের সমস্ত ইন্সটলমেন্ট (কিস্তি) দিয়ে দিয়েছি৷ বিমানের কোনো দেনা নেই। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো বিমানকে বসিয়ে রেখে বিজনেস করতে চায়, এটা কি সম্ভব? একদম ‘গাঁজাখুরি বিশেষজ্ঞ মত’ আমি বলব।
শফিউল আজিম বলেন, বিমান এক পয়সাও কারও কাছ থেকে নেয় না। আমরা জ্বালানি বাবদ পেট্রোবাংলার টাকা নিয়মিত দিচ্ছি, এনবিআরকে পাওনা দিচ্ছি। কাজেই বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর এগুলো মুখস্থ কথা। তাদের কোথায় বিজনেস আছে, কার সাথে চুক্তি করতে হবে, এগুলো নিয়ে স্টাডি করতে হবে।
শফিউল আজিম উল্লেখ করেন, এশিয়ায় বিমানের মতো ক্যাটারিং নেই। আমরা বেস্ট শেপ নিয়ে আসছি। লন্ডনে প্রশিক্ষণ করিয়েছি। আমাদের লোকজন ওয়েল ট্রেইনড। এখনও যে মার্কেট (দেশে) আছে, এখনো প্রতিযোগিতামূলক। নতুন কোনো এয়ারলাইন্সের এসেই বড়ো কোনো প্রতিযোগীর সাথে ফাইট করাটা কাজের কথা না।
তিনি বলেন, হিসাব নিয়ে অডিট আছে বিমানের। নামকরা অডিটর নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন। এখানে লুকোছাপার কিছু নেই। তবে, সারচার্জ নিয়ে আমাদেরও আপত্তি আছে, সেটি নিয়ে কথা বলা যাবে।
বিমানের প্রধান নির্বাহী বলেন, এখন সর্বশেষ তারা ভেবেছে বিমানের থেকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং নিলে লাভ করতে পারবে না; তা না। আমাদের মার্কেট তো হিউজ। অন্যান্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলো মার্কেট নিয়ে নিচ্ছে৷ তারা (বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো) কোনো অ্যাসেসমেন্ট ছাড়াই চলে আসছে। উচিত ছিল, ওই বাজারটা ধরা।
প্রসঙ্গত, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে গত ১ নভেম্বর (বুধবার) জাতীয় সংসদ ভবনে ৪২তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
এমকে/এমজে