ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ইউনাইটেডের ৫ প্লেন গ্রাউন্ডেড

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৩ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৪
ইউনাইটেডের ৫ প্লেন গ্রাউন্ডেড ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এমনিতেই ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত নেই। এন্তার অভিযোগের সঙ্গে এবার মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে বসে গেছে (গ্রাউন্ডেড) বহরের অর্ধেক উড়োজাহাজই।

বেসরকারি এই এয়ারওয়েজ বহরের মোট ১১টি উড়োজাহাজের মধ্যে এখন ৫টিই গ্রাউন্ডেড হয়ে পড়ে আছে।

১১টি উড়োজাহাজের মধ্যে এয়ারবাস ৩১০ দু’টি, এমডি ৮৩ পাঁচটি, এটিআর ৭২ তিনটি এবং ড্যাশ ৮-১০০ একটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দু’টি এয়ারবাসের একটি সব সময়ই অচল থাকে। বর্তমানে পাঁচটি এমডি ৮৩ এর মধ্যে তিনটি এবং তিনটি এটিআর ৭২ উড়োজাহাজের একটি অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে একটি এটিআর ৭২ এক মাসের বেশি সময় ধরে পড়ে আছে। ইঞ্জিন না থাকায় এটি সচল করা যাচ্ছে না। আর কখনোই এক সঙ্গে দু’টি এয়ারবাস ৩১০ উড়োজাহাজ সচল থাকে না। যখনই কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় তখনই একটি এয়ারবাসের যন্ত্রাংশ খুলে আরেকটিতে লাগানো হয়। এভাবেই জোড়াতালি দিয়ে চলছে ইউনাইটেডের এয়ারওয়েজ।      



সরেজমিনে গত ২৩ মে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ৬টি উড়োজাহাজ পড়ে রয়েছে। বিমানবন্দরে গেলে সব সময় ৫ থেকে ৬টি উড়োজাহাজ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এয়ারওয়েজ সূত্রে জানা গেছে, দু’টি এটিআর ৭২ উড়োজাহাজ দিয়ে ইউনাইটেড অভ্যন্তরীণ সব রুট এবং ঢাকা-কলকাতা ও ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটের ফ্লাইট চালিয়ে থাকে। আর ড্যাশ ৮-১০০ দিয়ে ঢাকা-কুয়ালালামপুরের মতো ফ্লাইট পরিচালনা করে। যাত্রী বেশি হলে ব্যবহার করা হয় এয়ারবাস ৩১০। এছাড়া ঢাকা-মদিনা ও ঢাকা-দোহা রুটে যাত্রী পরিবহনের জন্য সম্বল ওই একটি মাত্র সচল এয়ারবাস।   


 
বিমান চলাচল খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউনাইটেড এয়ার একদিকে রুট চালু করছে, অন্যদিকে তা বন্ধ করছে। এভাবেই চলছে এয়ারলাইন্সের রুট প্ল্যানিং। কিছুদিনের মধ্যে ইউনাইটেড এয়ার ঢাকা-সিঙ্গাপুর, ঢাকা-দুবাই ও ঢাকা-ব্যাংকক ফ্লাইট বন্ধ করে। অন্যদিকে সম্প্রতি চালু করেছে ঢাকা-দোহা ও ঢাকা-মদিনা রুট।  

অভিযোগ রয়েছে, মূলত ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ১১টি উড়োজাহাজ দেখিয়ে শেয়ার ছেড়েছে। যে কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তারা এসব উড়োজাহাজ বহর থেকে সরিয়ে ফেলতে পারছে না।  



প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী, খুচরা যন্ত্রাংশ প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রাপ্ত সর্বনিম্ন দরদাতার কাছ থেকে ক্রয় করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ইউনাইটেড এয়ার কর্তৃপক্ষ দরপত্র ছাড়া শুধু প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের একক সিদ্ধান্তে এসব উড়োজাহাজ কেনে।



ইউনাইটেড এয়ারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পায়, সংস্থাটি ২০ বছরের পুরনো উড়োজাহাজ কিনেছে আন্তর্জাতিক দর থেকে অনেক বেশি দামে। এছাড়া একই সময় কেনা একই মডেলের উড়োজাহাজ তারা কিনেছে ভিন্ন ভিন্ন দামে। যেমন- এমডি-৮৩ মডেলের তিন জাহাজের মূল্য ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৭৬ লাখ ২০ হাজার ডলার, ৮৮ লাখ ২৪ হাজার ৫৮০ ডলার এবং ৭৬ লাখ ডলার। অন্য তিনটি মডেলের উড়োজাহাজের ক্ষেত্রেও একই রকম করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মুখপাত্র ও অ্যাসিসট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন যে রুট ও ফ্লাইট কম উড়োজাহাজ কম থাকলেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। শিগগিরই সিঙ্গাপুর ও ব্যাংকক ফ্লাইট চালু করা হবে। তখন আবার এসব উড়োজাহাজ প্রয়োজন হবে। বর্তমানে সি চেকের জন্য এসব উড়োজাহাজ পড়ে আছে।     

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৪ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।