ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ছুটি নেই বিমানবন্দর এপিবিএন সদস্যদের!

ইমরান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৪
ছুটি নেই বিমানবন্দর এপিবিএন সদস্যদের!

ঢাকা: হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যদের কোনো ছুটি নেই!

নিয়ম অনুযায়ী বছরে ৪০ দিন ছুটি থাকলেও তারা পান ৩৫ দিন। অনেক সময় এই ছুটিও পান না অনেক সদস্য।

কয়েকজনের এপিবিএন সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিয়ের দিনও ভিআইপি ডিউটির জন্য বাড়িতে যেতে পারেন নি। মোবাইল ফোনেই কবুল বলতে হয়েছে।

অন্যদিকে, দিনে ৬ঘণ্টা ডিউটির নিয়ম থাকলে অতিরিক্ত আরও সাড়ে ৩ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয় তাদের।

এপিবিএন’র সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন শিমুল বাংলানিউজকে বলেন, সদস্যদের একেবারে যে ছুটি দেয়া হয় না এমন অভিযোগ সঠিক নয়। তবে বিমানবন্দর এপিবিএন সদস্যদের নিরবিচ্ছিন্ন ডিউটি করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নামে স্বতন্ত্র একটি বাহিনীর প্রস্তাব পাস হয়েছে। খুব শিগগির এটি হয়ে যাবে। তখন সদস্যদের এত ডিউটি করতে হবে না।

এপিবিএন সদস্যরা বলেন, বছরে আমাদের ছুটি ৪০ দিন। এর মধ্যে সিএল ছুটি ২০ দিন ও এলএপি ছুটি ২০ দিন। বাস্তবে এই ছুটি ৩৫ দিন। এলএপি ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ৫ দিনই দেয়া হয় না।

সদস্যরা জানান, ছুটি চাইতে গেলেও নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। ছুটি চাইতে গিয়ে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে এমন নজিরও রয়েছে। এখানে আমাদের সদস্যদের মধ্যে কেউ পরিবার নিয়ে থাকতে পারে না। স্ত্রী, সন্তানসহ সকল আত্মীয়-স্বজন গ্রামে থাকে। দীর্ঘদিন তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয় না। আবার দায়িত্বপালনকালে কেউ মোবাইল ব্যবহার করতে পারে না।

এপিবিএন সদস্যরা বলেন, অনেক সময় দেখা যায় ১০ দিনের ছুটি চেয়ে আবেদন করা হলো। সেখানে ৫ দিনের ছুটি মঞ্জুর হয়। কিন্তু বাড়িতে যেতে আর আসতেই দুই দিন সময় লেগে যায়। সেই ক্ষেত্রে ২ দিনের বেশি বাড়িতে থাকা যায় না। এটা অমানবিক!

তাদের অভিযোগ, ডিউটি পালনকালে অনেকে অসুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু অনেকে ডাক্তারের কাছে যায় না। কারণ ডাক্তার ওষুধ দিয়ে বিশ্রামে থাকার কথা বলে। বিশ্রাম শেষ হলে তাকে ডাবল ডিউটি করতে হয়। এ কারণে কেউ যদি অসুস্থ হয় তাহলে ডাবল ডিউটির ভয়ে ডাক্তারের নিকট যায় না।

মোবাইলে কবুল
ছুটি চেয়ে না পেয়ে অবশেষে ব্যারাকে মোবাইলে কবুল বলেছেন এমন তিনজন সদস্য এখনও এপিবিনে কাজ করেন। সদ্যরা হলেন, জিলানী, সুমন ও ওয়াহিদ।

ডিউটি নিরবিচ্ছিন্ন
সদস্যরা বলেন, বিমানবন্দরের ৬ ঘণ্টা ডিউটি শেষ হওয়ার পর অন্যদলটি আসতে বাড়তি আরো আধ ঘণ্টা সময় লাগে, অস্ত্র জমা দিয়ে ব্যারাকে যেতে আরো এক ঘণ্টা। ব্যারাকে ২/৩ ঘণ্টা পর শুরু হয় রোল কল, পিটি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ।

সদস্যরা বলেন, একজন সদস্য ৬ ঘণ্টা ডিউটির পর একসঙ্গে এত কাজ করলে বিশ্রাম নেবে কখন? এছাড়াও নিজেদের কিছু ব্যক্তিগত কাজ থাকে সেগুলো কখন করবো? ভিআইপি অথবা ভিভিআইপি ডিউটি থাকলে তো আর কথাই নেই। কখন ডিউটি শেষ হবে তা কেউ বলতে পারে না। ডিউটিকালীন কেউ বসে ডিউটি করতে পারবে না। সর্বক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে থেকে আমাদের ক্লান্তি চলে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এয়ারপোর্টে এ মুহূর্তে এক হাজার ১৮০ জন এপিবিএন সদস্য কাজ করছেন। এর মধ্যে ৭০০ নিজস্ব অর্থাৎ ৮ম ব্যাটালিয়নের সদস্য। আর বাকিদের বিভিন্ন স্থান হতে ডেপুটেশনে নিয়ে আসা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।