ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

শাহজালাল বিমানবন্দর

ঈদ মৌসুমে যাত্রীর চাপ, সক্রিয় চোরাকারবারীরা

ইমরান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪
ঈদ মৌসুমে যাত্রীর চাপ, সক্রিয় চোরাকারবারীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ঢাকা: ঈদ মৌসুম হওয়ায় শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করে হাজার হাজার প্রবাসী যাত্রী দেশে আসছেন। প্রতিদিন বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আর এই সুযোগে এক শ্রেণির চোরাকারবারী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিমানবন্দরে লোকজনের উপচে পড়া ভিড়কে কাজে লাগিয়ে এরা আনছে স্বর্ণসহ অবৈধ মালামাল।

অভিযোগ রয়েছে, কাস্টম কর্তৃপক্ষ অবৈধ কিছু মালামাল আটক করলেও যাত্রীদের চাপের কারণে অনেক সময় স্ক্যানিং ছাড়াই মালামাল বের হয়ে যায়। আর স্ক্যানিং ছাড়া যারা বের হয় তাদের অনেকেই সাধারণ যাত্রীবেশি চোরাকারবারী। এরাই বহন করে অবৈধ পন্য।

সরেজমিন দেখা যায়, ঈদ সামনে রেখে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী আসছেন। সবচেয়ে বেশি যাত্রী আসছেন দুবাই, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে। আর এই বিপুল যাত্রীর এই চাপকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারীদের একটা অংশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ছোট ছোট স্বর্ণের চালান থেকে শুরু করে বিদেশি ঔষুধ, সিগারেট, কাপড়সহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে আসছে তারা। সাধারণ যাত্রীদের চাপে কৌশলে চোরাকারবারীরা বাইরে চলে যাচ্ছে। আর এ মুহূর্তে ধরা পড়ার আশংকাও কম।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি সপ্তাহের শুধু মঙ্গলবারেই বিমনাবন্দর কাস্টম ও কাস্টম ইন্টিলিজেন্স তিনটি স্বর্ণের ছোট চালান আটক করে। তিন দফায় ৫ কেজির উপরে উদ্ধার হয় স্বর্ণ। এর একদিন পরই বুধবার আবার ৩ কেজির উপরে স্বর্ণ উদ্ধার করে কাস্টম ইন্টিলিজেন্স। অভিনব কৌশল অবলম্বন করে মাইক্রোওভেনের ভেতরে মোটরের কয়েলের সঙ্গে কালো স্কচটেপ দিয়ে পেচানো অবস্থায় তা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও প্রতিনিয়ত সিগারেট, ওষুধ, কাপড় জব্দ করছে কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে বিশেষ ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীর চাপ থাকে। আর এর সুযোগ নেয় চোরাকারবারী চক্র। বিমানবন্দরে অবতরণের পর ইমিগ্রেশন শেষ করে সবাই যখন স্ক্যানের জন্য লাইনে দাঁড়ায় সে লাইন হয় অন্য সময়ের চেয়ে । নেক দীর্ঘ। লাইন অনেক বেশি দীর্ঘ হওয়ার কারণে স্ক্যানিংয়ের দায়িত্বে থাকা কাস্টম কর্মকর্তারা অনেক সময় স্ক্যানিং ছাড়াই যাত্রীদের বের করে দেন। আর এই সুযোগে চোরাকারবারীরাও বেরিয়ে যায়। এতে করে অবৈধ মালামাল দেশে ঢুকছে। অন্যদিকে বিপুল পরিমান রাজস্বও হারাচ্ছে সরকার।

কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (প্রিভেনটিভ) রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টায় ৬৫টি ফ্লাইট অবরতরণ করে। বর্তমানে ঈদ মৌসুমে দৈনিক গড়ে ১৫ হাজারের বেশি যাত্রী আসছেন।

তিনি বলেন, যাত্রীরা বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর ইমিগ্রেশন শেষ করে লাগেজ পেয়ে স্ক্যানিংয়ে আসতে প্রায় দুই ঘণ্টা বা তার অধিক সময় লেগে যায়। স্ক্যানিংয়ে আমরা সবসময় চেষ্টা করে থাকি সব লাগেজ স্ক্যান করতে। অনেক সময় হয়তো দু’একটা হয় না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে স্ক্যানিং না করিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যেসব ছোট ছোট চালান আসছে সেগুলোতে অবৈধ মাল থাকলে সেগুলো ধরাও পড়ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন কোনো অবৈধ্ শুল্কায়নযোগ্য পণ্য বাইরে চলে না যায়।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা খুব সতর্ক রয়েছি। ‘

কাস্টম ইন্টিলিজেন্সের সহকারী পরিচালক অরিন্দম চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, এই সময়টাতে আমরা খুবই সতর্ক রয়েছি। সতর্ক থাকার কারণে স্বর্ণ চোরাকারবারীদের আটক করতে সক্ষম হচ্ছি আমরা।

যতই কৌশল করে স্বর্ণ আনুক না কেন আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদের সময়টাতে যাত্রীদের চাপের কারণেই আমরা সতর্ক রয়েছি।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।