ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

মালিন্দোর যাত্রী মানেই মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনে হয়রানি

অ্যাভিয়েশন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৫
মালিন্দোর যাত্রী মানেই মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনে হয়রানি

ঢাকা: ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটের মালিন্দো এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে কুয়ালালামপুরের কেএলআইএ-২ এয়ারপোর্টে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মালিন্দো কর্তৃপক্ষের হেঁয়ালির কারণেই এ দুর্ভোগ।



প্রতিদিন রাত ১১টা ২০ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছাড়ে মালিন্দোর ওডি ১৬১ ফ্লাইট। কেএলআইএ-২ তে ফ্লাইটটি অবতরণ করে মালয়েশিয়া সময় ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে।

সম্প্রতি এই ফ্লাইটে ভ্রমণ করা এক যাত্রী আবুল হাশেম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ইমিগ্রেশনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের সবার পাসপোর্ট নিয়ে নেন। বাংলাদেশ থেকে আসা মালিন্দোর সব যাত্রীদের লাইন ধরিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, নিজেদের দাস বলে মনে হচ্ছিল। ইমিগ্রেশনের বাইরে আমাদের সবাইকে ফ্লোরে বসতে বল‍া হয়। পুলিশ এসময় খুব বাজে ব্যবহার করে। প্রায় ঘণ্টা-দুয়েক দাঁড়িয়ে থেকে অফিসে আলাদাভাবে সাক্ষাৎকার দিয়ে মালয়েশিয়া প্রবেশের অনুমতি মেলে। আবার অনেককেই দেখেছি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ তারা সবাই পর্যটক ছিলেন।

তিনি বলেন, ইমিগ্রেশনে বিভিন্ন ধরনের অপমানজনক প্রশ্ন করছিলো। মনে হচ্ছিলো আমি সেখানে কাজ করতে যাচ্ছি।

শুধু আবুল হাসেম নয়, বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি যাত্রী বাংলানিউজের কাছে মালিন্দো এয়ারলাইন্সে ভ্রমণের পর এয়ারপোর্টে নেমে এ তিক্ত অভিজ্ঞতা জানান।

ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমি এখন মালিন্দো এয়ারের টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু এয়ারপোর্টের ঝামেলাই নয়, যাত্রীদের সঙ্গে এয়ারহোস্টেসদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছিলো।

তিনি বলেন, মালিন্দো একটি বাজেট ক্যারিয়ার। ২০১৪ সালের ২ মে থেকে কেএলআইএ-২ তে প্লেনটি অবতরণ ও উড্ডয়ন করে। কুয়ালালামপুরে কেএলআইএ-১ এর ট্যাক্স বেশি হওয়ায়, সাশ্রয় করার জন্যে কেএলআইএ-২ তে গন্তব্য করে মালিন্দো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখানে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। মালিন্দো কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ করছে না।

একজন যাত্রী বলেন, মালিন্দোতে রাতে যাত্রীদের যে খাবার দেওয়া হয় সেটিও নিম্নমানের। একবার খাবার দেওয়ার পরে পানি খেলেও সেটি রিঙ্গিত দিয়ে কিনে খেতে হয়। আর ইন-ফ্লাইটে টাকার বিনিময় না থাকায় অনেক যাত্রীর ক্ষুধা বা তৃষ্ণায় চুপ করে সহ্য করে যেতে হয়।

কেএলআইএ-২ তে হয়রানির বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের বদ্ধমূল ধারণা, মালিন্দো এয়ারে শুধু শ্রমিকরা আসেন। আর পর্যটক হিসেবে যে যাত্রীরা আসেন তারাও অবৈধভাবে মালয়েশিয়া থেকে যাবে। রাতে যে টার্মিনালে মালিন্দোর ফ্লাইটটি নামে, সেখানে ইমিগ্রেশনের কিছু বাজে অফিসার বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট হাতে নিয়ে নেয়।

অবশ্য কুয়ালালামপুরের অ্যাভিয়েশন সংশ্লিষ্টদের আরেকটি মতও রয়েছে। অনেকের মতে, ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মালিন্দো কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এ ধরনের হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশি যাত্রীদের হয়রানি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই মূল লক্ষ্য।

মালিন্দো এয়ারের আরেকজন এজেন্ট বাংলানিউজকে বলেন, মালিন্দোর অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মালয়েশিয়ার অবৈধ বাংলাদেশিদেরও পাঠানো হয় এই এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৫
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।