ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

জিএসএ রিভিউ করছে বিমান

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৫ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৬
জিএসএ রিভিউ করছে বিমান

ঢাকা: বিদেশে অবস্থিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর জিএসএ বা জেনারেল সেলস এজেন্টদের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি নবগঠিত বিমান পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জিএসএ রিভিউয়ের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে জিএসএ’দের বিরুদ্ধে পাওয়া নানা অভিযোগও আমলে নেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমান পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন সময়ই দেশি বিদেশি গোয়েন্দারা বিমানের জিএসএদের নানা অনিয়মের কথা রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটিকে অবহিত করেছে। মানব পাচার, মাদক ও সোনা চোরাচালান, অবৈধ কার্গো পরিবহনসহ এই সব অপরাধের বিষয়ে জিএসএ ও বিমান কর্মচারীদের সরাসরি অংশগ্রহণের প্রমানও বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি বিমানের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ। ফলে এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান পরিবহন সংস্থাটি বিদেশের বন্দরগুলোতে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়েছে।

তিনি বলেন, এইসব অভিযোগ ছাড়াও প্রবাসীদের কাছ থেকে জিএসএ’দের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। এর মধ্যে সাধারণ ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, টিকিট থাকতেও যাত্রীদের হয়রানি করা ও টিকিট না দেওয়া, সিট খালি রেখে অবৈধভাবে কার্গো পরিবহন করা এবং সিট খালি দেখানো ইত্যাদি। এইসব অনিয়মের মাধ্যমে জিএসএরা বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়লেও দিনদিন বিমান রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নিয়েই বিমানকে কলংকমুক্ত তরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। বিদেশি এমডিতে আগের অভিজ্ঞতা ভালো না থাকায় তারা দেশি অভিজ্ঞ এমডিও নিয়োগ দিয়েছে। এখন বিদেশে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে জিএসএ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অচিরেই এ কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে নতুন জিএসএ নিয়োগের কাজ শুরু করবে বিমান। এর মাধ্যমে বিদেশে হারানো ভাবমুর্তি উদ্ধার ছাড়াও উন্নত যাত্রী সেবার মাধ্যমে বিমানকে অধিকতর লাভজনক করা যাবে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠিত করে সরকার। সংস্থাটির নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার মার্শাল (অব.) মো. ইনামুল বারী। বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন (সংশোধিত) অধ্যাদেশ-২০০৭, কোম্পানি আইন-১৯৯৪ এবং অ্যাসোসিয়েশন অব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১৩ সদস্যের বিমান পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়।

পুনর্গঠিত ১৩ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদে আছেন অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিমানবাহিনীর সহকারী প্রধান (অপারেশন অ্যান্ড ট্রেনিং), সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ, সাবেক সচিব এম নজরুল ইসলাম খান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব তাপস কুমার রায়, বিজিএমইএ সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজিব-উল-আলম, ইমার্জিং রিসোর্সেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর-ই-খোদা আবদুল মোবিন,  বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৬
আরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।