ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

শাহজালাল পাচ্ছে ২ কোটি যাত্রীর সক্ষমতা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭
শাহজালাল পাচ্ছে ২ কোটি যাত্রীর সক্ষমতা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর

ঢাকা: বদলে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অবকাঠামো। চাহিদা ও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও ঢেলে সাজানো হচ্ছে দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরকে। নতুন করে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, টানেলযুক্ত মাল্টি লেভেল কার পার্কিং, নতুন কার্গো কমপ্লেক্স, ভিভিআইপি কমপ্লেক্স ও রেসকিউ অ্যান্ড ফায়ার ফাইটিং সুবিধা যুক্ত হতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বছরে ২ কোটি যাত্রী সেবা দিতে সক্ষম হবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যা বর্তমান সক্ষমতার চেয়ে ৮০ লাখ বেশি।  

সুত্র জানায়, বর্তমানে এই বিমানবন্দরে বছরে ১ কোটি ২০ লাখ (১২ মিলিয়ন)  যাত্রী পরিবহনে সক্ষম।  

দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিমান পরিবহনের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণ ও আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই অবকাঠামোগত সুবিধার উন্নয়নে এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

 

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানায়, বিদ্যমান অবকাঠামোতে বছরে ৮০ লাখ (৮মিলিয়ন)  যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করছে। প্রতি বছরই এ সংখ্যা গড়ে ৫ লাখ হারে বাড়ছে। একইভাবে বছরে অভ্যন্তরীণ রুটে ৬ লাখের মতো যাত্রী ব্যবহার করছে বিমান বন্দরটি।  

বেবিচক’র প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী বাংলানিউজকে বলেন, বিমানের যাত্রী প্রতিনিয়তই বেড়ে চলছে। সে কারণে নতুন করে রানওয়ে নির্মাণসহ এই বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে সব মিলিয়ে ২০ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহনে স্বক্ষম হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর।  

এই কাজে জাপান সরকারের সহায়তা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে প্রকল্প অর্থায়নের নিশ্চিয়তা পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।  

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৬১৫ কোটি ৪৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ১১ হাজার ২১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে।  

২০২২ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে হয়েছে বলেও জানায় সূত্র।  

এরই মধ্যে প্রকল্পের তথ্য সংগ্রহ ও জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জাইকার জরিপ ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলীসহ কারিগরী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই এই ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী।  

প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে নির্মিত হবে তিনতলা বিশিষ্ট প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল-থ্রি। প্রায় ৬২ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে টানেলযুক্ত মাল্টি লেভেল কার পার্কিং, চার লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ বর্গমিটার জুড়ে থাকবে পার্কিং অ্যাপ্রোন।  

তৈরিপোশাকসহ নানা পণ্য পরিবহণে কার্গো ভলিউমের সংখ্যাও আন্তর্জাতিক রুটে বাড়ছে। প্রতিবছর বর্তমানে বিমান বন্দরে কার্গো পরিবহন ফ্যাসিলিটি দুই লাখ টন। কিন্তু কার্গো পরিবহন করা হচ্ছে ২ দশমিক ৫৯ লাখ টন। এই লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় কার্গো পরিবহন সুবিধাও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  প্রায় ৪১ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বানানো হবে নতুন কার্গো কমপ্লেক্স, জানান তারা।

এছাড়া ৫ হাজার ৯০ বর্গমিটার জুড়ে ভিভিআইপি কমপ্লেক্স ও ১ হাজার ৮২০ বর্গমিটার জুড়ে থাকবে রেসকিউ অ্যান্ট ফায়ার ফাইটিং সুবিধা। প্রায় ৬৬ হাজার ৫০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে থাকবে ট্যাক্সিওয়ে।  

প্রায় ৪১ হাজার ৫০০ বর্গমিটার জুড়ে থাকবে আরও একটি ট্যাক্সিওয়ে। জরুরি মুহুর্তে বের হয়ে আসার দুটি পথ থাকবে। জলাধার ও পানি সরবরাহের নতুন ব্যবস্থা থাকবে প্রকল্পের আওতায়।

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আকাশ পথে ভ্রমণ। ফলে বাড়ছে উড়োজাহাজের সংখ্যাও। বেসরকারি খাতেও নতুন নতুন গন্তব্যে পাখা মেলছে বাংলাদেশের উড়োজাহাজ।  

বেবিচক সূত্র জানায়, বর্তমানে দৈনিক সরকারি-বেসরকারি, সামরিক ও বেসামরিক মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৩৫-২৪০টি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।  

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন সামনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। আর সে বিবেচনা থেকেই নতুন এই প্রকল্পের আওতায় সব ধরণের অবকাঠামোগত বড় বড় পরিবর্তন আসছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭
এমআইএস/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।