ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

সততার ট্রেনিং দিয়েছে ইউএস বাংলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৭
সততার ট্রেনিং দিয়েছে ইউএস বাংলা সততার পুরস্কার নিচ্ছেন ইউএস বাংলার ২ কর্মী/ছবি: রানা

ঢাকা: ইচ্ছে করলে আমরা স্বর্ণগুলো নিতে পারতাম। কিন্তু আমাদের ম্যানেজমেন্ট (ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স) সেটা শিক্ষা দেয়নি। তারা আমাদের সততার ট্রেনিং দিয়েছে। যার জন্য আমরা না খেয়ে থাকলেও কোনো পণ্য নিব না।

আমাদের কারণে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হবে সেটা আমরা চাই না। যার জন্য আমরা প্যাকেটটি পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাই।

পুরস্কার পেয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের পরিচ্ছন্নতাকর্মী আলমাস হোসেন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে একথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা এয়ারলাইন্স পরিষ্কার করি। আর ঘটনার সময় আমরা দু’জন ছাড়া আর কোনো অফিসার ছিলো না। আমরা চাইলেই সহজেই প্যাকেটটি নিয়ে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু আমরা সেটা না করে আমাদের ইনচার্জকে বিষয়টি জানাই। এছাড় আজ পুরস্কার পেয়ে নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। জীবনে এটাই আমার বড় পাওয়া বলেন আলমাস হোসেন।

আরও পড়ুন** সততার অনন্য নজির ইউএস-বাংলার ২ কর্মীর
বুধবার (০৩ মে) বিকেলে রাজধানীর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কনফারেন্স রুমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে ইউএস বাংলার ২ কর্মী আবদুল কাদের (২৯) ও আলমাস হোসাইনকে (৩৮) সততার পুরস্কার দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর।

অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান ইউএস বাংলা’র ২ কর্মীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার হিসেবে তাদের একটি সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন** ইউএস-বাংলার ২ কর্মীকে পুরস্কৃত করছে এনবিআর
এসময় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমি খুবই অভিভূত। আজ আমি গর্ববোধ করছি। বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটি ইউএস বাংলার দুই কর্মীর সততায় বোঝা যায়। তারা আমাদের ‘রাজস্ব যোদ্ধা’। ৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যা করেছেন আমার মনে হয়, আজ তারাও সেটি করেছেন। এজন্য সরকারের রাজস্ব আহরণে তারা যে কাজটি করেছেন সেটি রাজস্ব যোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হয়। শুধু তাই নয়, ইউএস বাংলার দুই কর্মী বাঙালিআনার পরিচয় দিয়েছেন।  

আরও পড়ুন: ** ইউএস-বাংলার ২ কর্মী ‘রাজস্ব যোদ্ধা’
তিনি আরও বলেন, ইউএস বাংলার ওই ২ কর্মী চাইলে খুব সহজেই স্বর্ণগুলো আত্মসাৎ করতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটি করেননি। তারা সততার পরিচয় দিয়েছেন। এজন্য পুরো রাজস্ব বোর্ড তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে।      

সোমবার (১ মে) দুপুর ২টার দিকে ভারতের কলকাতা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস ২০২। সব যাত্রী এয়ারলাইন্স থেকে নেমে যাওয়ার পর ডিপক্লিন (পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন) করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।  

এসময় এয়ারলাইন্সের পরিচ্ছন্নকর্মী আবদুল কাদের ও আলমাস হোসাইন সিটের নিচে একটি প্যাকেট দেখতে পান। তারা লোভ সামলিয়ে বিষয়টি ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এরপর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালকের পরামর্শ অনুযায়ী শাহজালাল কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানায়। আর কাস্টমস কর্মকর্তারা সবার সামনে প্যাকেটটি খুলে দেখেন ৬০টি চকচকে স্বর্ণের বার। যার ওজন প্রায় ৭ কেজি। আর বাজার দর প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা।  

সততার এমন উদাহরণ অহরহ পাওয়া যায় না। আর তাই তাদের সততায় অভিভূত হয়ে পুরস্কৃত করলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৭
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।