ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ফের মুনাফায় ফিরেছে বিমান

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৯
ফের মুনাফায় ফিরেছে বিমান বিমান বাংলাদেশ

ঢাকা: গত নয় বছরের মধ্যে ছয় বছরই লোকসান দিয়েছে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর লোকসান দেয় সংস্থাটি। তবে পরবর্তী তিন অর্থবছরে কিছুটা লাভের মুখ দেখলেও একবছর পরই ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বড় অংকের লোকসান দেয়।

বড় লোকসান দেওয়ার পর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ফের মুনাফায় ফিরেছে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাটি। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্যেও এ অর্থবছরে প্রায় পৌনে ৩শ কোটি টাকা মুনাফা করেছে এয়ারলাইন্সটি।



বিমানের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিমানের মোট আয় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। সব মিলে বিমানের ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ২৭২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বকেয়া পরিশোধ করেছে ৫৩ কোটি টাকা। এছাড়া ফুয়েল সংগ্রহ করেছে নগদ ৮৫০ কোটি টাকার।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
লিমিটেডের লোকসানের পরিমাণ ২০১ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিমান থেকে আয় হয় ৪ হাজার ৯৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয় ৫ হাজার ১৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। এতে লোকসান হয় ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান থেকে আয় হয় ৪ হাজার ৫৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ব্যয় হয় ৪ হাজার ৫০৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরে ৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা লাভ হয়। একইভাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আয় হয়। এর বিপরীতে ব্যয় হয় ৪ হাজার ৭৩০ কোটি ৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ ওই অর্থবছরে লাভ
হয়েছে ২৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তার আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৪-১৫ সালে আয় হয় ৪ হাজার ৬৯৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ব্যয় হয় ৪ হাজার ৪১৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লাভ হয়েছে ২৭৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

বিমানের আয়–ব্যয়ের শাখার দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৯১–৯২ থেকে ২০০৩–০৪ অর্থবছর পর্যন্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল বিমান। এরপর আবার টানা লোকসানে পড়ে এয়ারলাইন্সটি। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিমানকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরই লাভ করে বিমান। এরপর ২০০৯–১০ থেকে ২০১৩–১৪ পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর লোকসান দেয় বিমান। তারপর তিন
অর্থবছর লাভ করে। গত অর্থবছরে (২০১৭–১৮) এসে আবার লোকসান দেয়।

অথচ বিমানের যাত্রী পরিবহনের হিসাব বলছে, ২০১৬–১৭ অর্থবছরে ২৩ লাখ ৫১ হাজার যাত্রী পরিবহন করে বিমান লাভ করে ৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। পরের বছর ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি যাত্রী পরিবহন করেও লোকসান দেয় ২০১ কোটি টাকা। আবার ২০১৪–১৫–তে যাত্রী ছিল আরও কম (২০ লাখ ২০ হাজার), তখনো লাভ করে ২৭৬ কোটি
টাকা।

বিমানের হিসাব শাখার তথ্য অনুযায়ী, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে দুই বছর বিমান লাভ করলেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিষ্ঠানটি আবার লোকসানে পড়ে। গত ৯টি অর্থবছরের মধ্যে ছয় বছরই লোকসান দিয়েছে। টাকার অঙ্কে সেটা ১ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। বাকি ৩ বছরে লাভ করেছে
৫৫৯ কোটি টাকা। মোট লাভ–লোকসান যোগ–বিয়োগ করলে ৯ বছরে মোট লোকসান দাঁড়ায় প্রায় ৯০০ কোটি টাকা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী বাংলানউজকে বলেন, বিমানকে লাভজনক করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিমানে শুদ্ধি অভিযান চলছে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিমানকে লাভজনক করতে যা যা করণীয়, সবই করবে সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৪ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
টিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।